সৌদি থেকে কফিনে ফিরলেন বাবুগঞ্জের বিল্লাল

উপজেলা প্রতিনিধি, (বাবুগঞ্জ) বরিশাল
প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৬

‘ভাইয়া, তুমি আইসো… আমারে একটু বাঁচাও। আরেকবার আইসিইউতে ভর্তি করো। শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে…’— হাসপাতালের বেড থেকে সৌদি প্রবাসী বিল্লাল হোসেনের এটাই ছিল শেষ বার্তা, যা পাঠিয়েছিলেন ভগ্নিপতি সোহাগ হোসেনকে।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস— আইসিইউতে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিলেও আর সুস্থ হয়ে ওঠেননি তিনি। প্রবাসের মাটিতে জীবনযুদ্ধে হেরে যান বিল্লাল।

৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সৌদি আরবের দাম্মাম মেডিকেল কমপ্লেক্সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ভুতেরদিয়া গ্রামের মন্টু ফকিরের ছেলে বিল্লাল হোসেন।

চলতি বছরের ১৯ মার্চ দক্ষিণ বাংলা ওভারসিজ লিমিটেডের মাধ্যমে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরব গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তিন মাস যেতে না যেতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ২৭ জুন দাম্মাম মেডিকেল কমপ্লেক্সে ভর্তি হলে জটিল অপারেশনের পর তার পিঠের একটি টিউমার ফেটে যায়। এতে বাম হাতসহ বুকের নিচ থেকে পা পর্যন্ত অবশ হয়ে পড়েন তিনি। নিয়োগকর্তার উপস্থিতি না থাকায় চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটে।

এ অবস্থায় গত ১৯ আগস্ট বিল্লালের বোন মাসুদা বেগম ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন করেন। পরে দূতাবাসের টিম তাকে দেখে জানায়, শারীরিক অবস্থার কারণে দেশে ফেরানো সম্ভব নয়, তবে সুচিকিৎসার আশ্বাস দেওয়া হয়।

কিন্তু হঠাৎ করেই ৪ সেপ্টেম্বর পরিবারে পৌঁছে যায় মৃত্যুসংবাদ। মরদেহ আনার আবেদন করলে অবশেষে ১২ সেপ্টেম্বর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বিল্লালের লাশ দেশে আসে। এদিন তার বোন মাসুদা মরদেহ গ্রহণ করেন।

চার বোনের একমাত্র ভাই ছিলেন বিল্লাল। বাবা পেশায় অটোরিকশাচালক। পরিবারের অভাব ঘোচাতে ও সচ্ছলতা ফেরাতে প্রবাসে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রেমিট্যান্স যোদ্ধা বিল্লালের স্বপ্ন ভেঙে গেল মাত্র ছয় মাসেই। জীবনের সমস্ত স্বপ্ন গুছিয়ে কফিনবন্দি হয়ে ফিরলেন তিনি আপন ভিটেমাটিতে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত