খতিবের ওপর হামলার কারণ জানালেন সেই ব্যক্তি

জেলা প্রতিনিধি, চাঁদপুর
প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৫, ২২: ৫৭
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৫, ১৩: ১২

চাঁদপুরে জুমার নামাজ শেষে মসজিদের খতিবকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে চাঁদপুর মডেল থানায় মামলাটি করেন আহত খতিব মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানির বড় ছেলে আফনান তাকি।

শনিবার বিকালে হামলাকারী বিল্লাল হোসেনকে আদালতে তোলা হয়। জবানবন্দি শেষে সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা নাজমুল হাসান। আদালত তাকে রিমান্ড না দিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করে।

বিজ্ঞাপন

ঘাতক বিল্লাল জানান, রোজার একদিন আগে ইমাম সাহেব বয়ান করছিলেন। কিছু লোক মিষ্টি নিয়ে আসেন মিলাদের জন্য। তারা বলেছেন, হুজুর আজকে মিলাদের আয়োজন আছে, দয়া করে একটু মিলাদ পড়াবেন। তখন হুজুর মুসল্লিদের উদ্দেশে বলেন, কোরআনে মিলাদ বলতে কিছু নেই। এই কথা বোঝাতে গিয়ে তিনি মুসল্লিদের উদ্দেশে বলেছেন, অফিসারের কাছে দরখাস্ত না করে পিয়নের কাছে দরখাস্ত করলে তা কি মঞ্জুর হবে?

তখন আমার মাথায় ঢুকল নবীকে ইমাম সাহেব পিয়ন বলে অপমান করেছেন। কেন পিয়ন বললেন? সেটা আমি মানতে পারিনি। তাই কোরবানির এক মাস আগে এক হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে একটা চাপাতি বানিয়েছি।

এদিকে খতিবের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠে। গতকাল বাদ আসর শহরের বায়তুল আমিন জামে মসজিদের সামনে চাঁদপুর জেলা এবং শহর জামায়াতের উদ্যোগে মানববন্ধন করা হয়। এতে বক্তব্য দেন চাঁদপুর জেলা জামায়াতের আমির বিল্লাল হোসেন মিয়াজী, সেক্রেটারি শাহজাহান মিয়া, শহর জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট শাহজাহান খান প্রমুখ।

মাদানির বড় ছেলে বলেন, আমার বাবার ওপর হামলাকারীর বিচার দাবি করছি। আমার বাবাকে শুক্রবার রাতে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা হলি কেয়ার হসপিটালে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত।

চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিন্টু দত্ত বলেন, শুক্রবার রাতে মাওলানা নূর রহমান মাদানির বড় ছেলে বাদী হয়ে আসামি বিল্লাল হোসেনের নামে থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

মসজিদ কমিটির সভাপতি হুমায়ূন কবীর চৌধুরী বলেন, হুজুর কবে কী বলেছে তা আমাদের জানা নেই। ঘাতক আমাদের মসজিদে মাঝেমধ্যে নামাজ পড়েন। তিনি একজন মুদি দোকানি। সে এমন করবে এটা আমরা বুঝতে পারিনি। কিংবা এ ধরনের কোনো আলামতও আমরা ইতোমধ্যে দেখিনি। আমাদের মনে হয় লোকটি কোনো উগ্রবাদী সংগঠনের সদস্য হতে পারে।

মসজিদের নিয়মিত ইমাম মাহবুবুল হাসান বলেন, এ ঘটনায় আমরা হতবাক, ভীতসন্ত্রস্ত। তিনি বলেন, আমাদের খতিব অত্যন্ত নম্র-ভদ্র এবং আমলি মানুষ। মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি কখনোই নবীকে খাটো করে কথা বলতে পারেন না।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত