ভোলার চরফ্যাশনে একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার নাম জহিরউদ্দীন বাবর। তিনি উপজেলার আসলামপুর এলাকার সুলতান মিয়ার বাজার নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। চাকরি দেওয়ার নামে তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এতে ভুক্তভোগী ও এলাকার মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক বাবরের বিরু্দ্ধে ইতোমধ্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী আমলে প্রধান শিক্ষক বাবর নৈশপ্রহরী পদে নিয়োগ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে রুহুল আমিনের কাছ থেকে আড়াই লাখ, মোহাম্মদ এরশাদ মিয়ার কাছ থেকে ৪ লাখ এবং সিদ্দিক হাওলাদারের কাছ থেকে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের কাউকেই চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়নি, বরং ওই পদে অন্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী রুহুল আমিন বলেন, প্রধান শিক্ষক বাবর নৈশপ্রহরীর পদে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমার কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু চাকরিতে নিয়োগ দেননি। পরে টাকা ফেরত চাইলে তিনি পালিয়ে যান।
এরশাদ মিয়া বলেন, চাকরির আশ্বাসে আমি প্রধান শিক্ষক বাবরকে ৪ লাখ টাকা দিয়েছিলাম, কিন্তু আমার নাম নিয়োগ তালিকায় নেই। টাকা চাইলে তিনি নানা অজুহাতে আমাদের এড়িয়ে চলেন।
সিদ্দিক হাওলাদার বলেন, প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে আসছেন না। টাকা ফেরত চাওয়ায় গত ২৬ নভেম্বর আমরা তাকে বিদ্যালয়ে ধরার চেষ্টা করি। দুই ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ রাখার পর স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে তিনি চলে যান। আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা মামুন ও তারেক হাওলাদার জানান, প্রধান শিক্ষক গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে বিদ্যালয়ে আসছেন না। স্থানীয়দের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। তার বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেওয়া হোক।
অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বাবরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
চরফ্যাশন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মীর একেএম আবুল খায়ের বলেন, অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

