নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য বরকত উল্লাহ বুলুর নির্বাচনি সভায় হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের একলাশপুর ফাজিল মাদরাসা মাঠে এ হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
একলাশপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিম চুন্নু সাংবাদিকদের বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরকত উল্লাহ বুলু নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী। সোমবার বিকেলে একলাশপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনের লক্ষ্যে একটি সভার আয়োজন করে স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ওই সভায় বিকেল ৪টার দিকে প্রায় তিন শতাধিক নেতাকর্মী এসে যোগ দেন। এ সময় হঠাৎ মুখোশ পরে ৫০-৬০ জন যুবক এসে হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য মোর্শেদ সিরাজীকে কুপিয়ে আহত করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে তারা সভাস্থলে প্রায় ৫০০ চেয়ার ও মঞ্চ ভাঙচুর করে চলে যায়। হামলাকারীরা যাওয়ার সময় বলে যায় এখানে কোনো সভা করা যাবে না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিম চুন্নু সাংবাদিকদের বলেন, হামলাকারীরা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-যুবলীগের সম্রাট বাহিনী ও খালাসি বাহিনীর সদস্য ছিল। আমি তাদের কয়েকজনকে আদালত আঙিনায় আগে দেখেছি। তাৎক্ষণিক পুলিশকে অবহিত করা হলেও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেনি।
বিএনপি নেতা মোর্শেদ সিরাজী অভিযোগ করেন, বুলু ভাইয়ের ধানের শীষের জন্য পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দ্র কমিটি করতে গেলে, দলীয় লোকেরা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের নিয়ে এ হামলা চালায়। যারা হামলা চালিয়েছে, তারা প্রোগ্রাম আয়োজন করলে পাঁচজন আসে না, আর আমাদের ডাকে এক হাজার লোক আসছে। তারা লাঠি সোটা ও অস্ত্র নিয়ে আমাদের ও নারীদের ওপর হামলা চালায়, এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং ভাঙচুর করে। আমাকে কোপাতে গিয়ে তাদের একজনের গায়ে কোপ লাগে।
বিএনপি নেতা মো. নূর নবী অভিযোগ করেন, চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালায়। প্রথমে দুপুর ২ টার দিকে প্যান্ডেলে হামলা করে চেয়ার ভাঙচুর করে অগ্নি সংযোগ করে। পরবর্তীতে আমরা পুনরায় প্যান্ডেল সাজিয়ে নেই। তারা আবার বিকেলে সভায় হামলা চালায়। তারা চাঁদাবাজি করে ২ লাখ টাকা তুলতো ৫০ হাজার টাকা প্রোগ্রামে খরচ করে বাকি দেড় লাখ টাকা নিজেরা নিতো। আমরা নিজের টাকা খরচ করে প্রোগ্রাম করেছি, এটা আমাদের অপরাধ। নূরনবী আরও অভিযোগ করেন, একলাশপুর সিএনজি পাম্পে ডাকাতি মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি ওসমান, শহীদের ছেলে রুবেল, রাব্বি মুন্সীসহ ২৫/৩০ জন লাঠি সোটা নিয়ে এ হামলা চালায়।
নবী আরও অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা সবাই বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামাখ্যা চন্দ্র দাস এর অনুসারী। ঘটনাস্থল এলাকা একলাশপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামাখ্যা চন্দ্র দাসের বাড়ি।
এ ঘটনায় ওসমান, রুবেল ও রাব্বি মুন্সীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামাখ্যা চন্দ্র দাসের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে, সোমবার রাত ৯টার সময় তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ নাকচ করে তিনি আমার দেশকে বলেন, ওয়ার্ড নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই আমার। ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারির মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তদন্ত টিম গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এ ঘটনায় দুইজন আহত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ বারী সোমবার রাত দশটার সময় জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে তবে, সেখানে উল্লেখযোগ্য কোনো কিছু হয়নি। ভাঙচুরের বিষয়ে তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে যারা ছিলেন তারা এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ দেননি।

