ওসি বললেন গ্রেপ্তারের ভয়ে হয়ত জামায়াতে যোগ দিয়েছেন

আওয়ামী দোসর জাপা নেতার জামায়াতে যোগদান, সমালোচনার ঝড়

উপজেলা প্রতিনিধি, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৩: ৫৮
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৪: ০৭

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে দিদারুল আলম নামে আওয়ামী দোসর জাতীয় পার্টির এক নেতার জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ রাজনৈতিক সচেতন মহলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।

শুক্রবার দুপুরে উপজেলা মডেল মসজিদে উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত সাবেক সাথী ও সদস্য সমাবেশে তিনি জামায়াতে যোগদান করেন। এসময় মঞ্চে উপস্থিত চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির নজরুল ইসলাম তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। সমাবেশ স্থলে উপস্থিত জেলা ও উপজেলা নেতারা করতালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান।

দিদারুল আলম চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সম্পাদক। এদিকে জেলা পর্যায়ের এই নেতার হঠাৎ করে জামায়াতে যোগ দেওয়াকে ঘিরে রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে এলাকার সাধারণ জনগণের মাঝে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনাও ঝড় বয়ে যাচ্ছে। জামায়াতের অনেকেই তাদের ফেসবুকে লিখেছেন, স্বৈরাচারের ভ্যানগার্ড জাতীয় পার্টি বিগত দিনগুলোতে বিএনপি ও জামায়াতের সাথে গাদ্দারি করে সবকটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সীতাকুণ্ডে ও জাতীয় পার্টি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এই জাতীয় পার্টি স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে তাদের সকল অপকর্মের অংশীদার হিসেবে কাজ করেছে।

Card-Thumb-2

শুধু তাই নয় জাতীয় পার্টির এই নেতার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ছবিও সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে ভাসছে। এসব পোস্টে অধিকাংশ মন্তব্যে জামায়াতকে নিয়ে কড়া সমালোচনা করছে। তাদের মতে, জাতীয় পার্টি জামায়াতে যোগ দেওয়া আর আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া একই কথা। অনেকে জামায়াতকে সাবেক এমপি আওয়ামী লীগ নেতা এস এম আল মামুনকেও তাদের দলে বেড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

মো. ফয়েজ নামে শিবিরের এক কর্মী তার ফেসবুক আইডি থেকে লিখেছেন, স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্টকে পুনর্বাসনে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মত জামায়াতও পিছিয়ে নেই।

মোহাম্মদ সুমন নামে আরেকজন লিখেছেন, দিদারুল আলম আওয়ামী লীগের চিহ্নিত দোসর৷ তার ছেলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের একটি কমিটির সহ-সভাপতি ছিল৷

জাতীয় পার্টির এই নেতার গ্রামের বাড়ি বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দারা ফেসবুকে লিখেছেন, জামায়াতে ইসলামী কি দেউলিয়া হয়ে গেল যে জাতীয় পার্টির এমন একজনকে যোগদান করালো যে দল বিগত ১৭ বছর বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের রক্ত চুষে খেয়েছে৷ জামায়াত কি করে এসব এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেল?

22

অপরদিকে কারা তাকে জামায়াতে ঢুকিয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত করতে দাবি তুলেছেন জামায়াতেরই একটি পক্ষ। একইভাবে জয়নাল আবেদীন নামে একজন জামায়াতকর্মী তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, জাতীয় পার্টি মানে জাতীয় বেঈমান। তার গত জীবনের আমলনামা ফ্যাসিজমের পক্ষে ভরা। তাছাড়া জামায়াতে এ ধরনের কোন নিয়ম নেই। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা জুড়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা চলছে।

সীতাকুণ্ড উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মিজানুর রহমান আমার দেশকে বলেন, দিদারুল আলম ইসলামী চেতনার একজন মানুষ। আমরা যাচাই-বাছাই করে তাকে দলে ঠাঁই দিয়েছি।

সীতাকুণ্ড থানার ওসি মজিবুর রহমান আমার দেশকে বলেন, গ্রেপ্তারের ভয়ে হয়ত তিনি জামায়াতে যোগ দিয়েছেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত