মাঝে মধ্যে জ্ঞান ফিরছে শিশু আরাধ্য’র

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৭: ১২

বুধবার বিকেল ৪টা। সবকিছু ঠিক থাকলে বাবা মায়ের হাত ধরে সমুদ্র সৈকতের বেলাভূমিতে খেলে বেরানোর কথা ছিলো সাত বছরের শিশু আরাধ্য বিশ্বাসের। কিন্তু ভাগ্য তাকে টেনে এনেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিছানায়। তার বাবা দিলিপ বিশ্বাস আর মা সাধনা বিশ্বাস মামা আশিষ বিশ্বাসের ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালের মর্গে। ভাগ্য আরাধ্যকে এখনো বাঁচিয়ে রেখেছে।

বিজ্ঞাপন

বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালের বিছানায় একাই কাতরাচ্ছে শিশুটি। ছোট্ট শরীরকে অসংখ্য ক্ষত চিহ্ন। ঈদের ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে কেনা পরনের নতুন ড্রেসটিতে রক্তের দাগ শুকিয়ে গেছে। বাবা, মা, মামাতো ভাইয়কে সঙ্গে শিশুটি ঘুরতে যাচ্ছিলো কক্সবাজার। সঙ্গী হয়েছিলেন তার বাবা দিলিপ বিশ্বাসের এক সহকর্মী ও তার পরিবারের সদস্যরাও। দুটি পরিবারের মোট ১১জন আর গাড়িচালকসহ মোট ১২জন রওনা হয়েছিলেন কক্সবাজার। পথেরমধ্যে লোহাগাড়ায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় গাড়িতে থাকা ১০ জনেরই মৃত্যু হয়।

আরাধ্যার সঙ্গে বেঁচে যাওয়া যাত্রীটির নাম পরিচয় এখনো স্পষ্ট নয়। কারণ তার জ্ঞান ফেরেনি বিকেল পর্যন্ত। পরিবারের স্বজনরাও কেউ এখনো পৌঁছেনি হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানান, মাঝে মধ্যে আরাধ্যর জ্ঞান ফিরছে তবে নিজের ও বাবা মায়ের নাম ছাড়া আর কিছুই বলতে পারছে না।

শিশুটির স্বজনদের কেউ এখনো হাসপাতালে পৌঁছতে পারেনি। পথে থাকা তাদের এক আত্মীয় জয় মোবাইল ফোনে জানান, শিশুটির পিতা দিলিপ বিশ্বাস ঢাকায় একটি গার্মেন্টেসে চাকরি করতেন। মা-বাবার সঙ্গে ঢাকার ভাড়া বাসায় থাকতো শিশুটি। এবছর ক্লাস ওয়ানে উঠেছে সে। কমাস ধরেই বাবার কাছে বায়না ধরে সমুদ্র দেখার। বাচ্চার আবদার রক্ষায় এক সহকর্মীর সঙ্গে শেয়ারে মাইক্রোভাড়া করে ঈদের ছুটি কাটাতে কক্সবাজারে যাওয়ার পরিকল্পনা করে তারা। শিশুটির আবদায়ে এই যাত্রায় সঙ্গী হতে গতকাল সকালে ঝিনাইদহ থেকে ঢাকায় আসে আরাধ্যর মামা আশিষ মন্ডল ও আরেক মামার ছেলে দুর্জয় মণ্ডল।

মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুটির বাবা, মায়ের সঙ্গে মামাও নিহত হন। মামাতো ভাই দুর্জয় এখনো বেঁচে থাকলেও তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত