‘হাটহাজারীতে ৪২ বছর ধরে পত্রিকা বিক্রি করছেন অজতি কৃষ্ণ’ শিরোনামে গত ৫ ডিসেম্বর দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর এক আরব আমিরাত প্রবাসীর দেওয়া একটি বাইসাইকেল উপহার পেয়ে খুশিতে আত্মহারা অজতি কৃষ্ণ।
জনা যায়, অজিত কৃষ্ণ দাশ এর একটি ভাঙ্গা সাইকেল নিয়ে সূর্যের আলো ফোটার আগেই হাটহাজারী উপজেলার পার্শ্ববর্তী উপজেলা রাউজানের বাড়ি থেকে সাত কিলোমিটার দূরে প্রতিদিন উপজেলার মেখল, গড়দুয়ারা ও উত্তর মার্দাশা ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত।
বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন ভোরে সবার হাতে পৌঁছে দেন দোকানে, মানুষের বাড়ি, ঘর, স্কুল, মাদরাসা, ব্যাংক, অফিসে পৌঁছে দেন পত্রিকা। এভাবে রোদ, বৃষ্টি, ঝড় উপেক্ষা করে চলে বছরের পর বছর।
ভাঙ্গা একটি বাইসাইকেলে করে বছরের কয়েকটা দিন ছাড়া ছুটি নেই তার। বর্তমানে স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে চারজনের সংসার। পত্রিকা বিক্রি করে সংসার চলে তার। এর মধ্যে পত্রিকা বিক্রি করে এবং ছেলে মেয়ে দুইজন টিউশনি করে তারা সুশিক্ষিত হয়েছে।
এই খবর দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারেন হাটহাজারী উপজেলার মেখল ইউনিয়নের গণি তালুকদার বাড়ির আরব আমিরাত প্রবাসী আনোয়ার আজাদ।
এরপর তিনি আমার দেশ প্রতিনিধির মাধ্যমে হকার উচিত কৃষ্ণ দাশের সাথে যোগাযোগ করে একটি বাইসাইকেল উপহার দেওয়ার কথা বলেন।
এরপরর একটি নতুন ফনিক্স বাইসাইকেল ক্রয় করে। শনিবার সকালে উপজেলা পরিষদে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মুমিন সাইকেলের চাবি ও সাইকেলটি উপহার প্রদান করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অরুণ ত্রিপুরা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল মোর্শেদ, প্রেস ক্লাব যুগ্ম সম্পাদক দৈনিক আমার দেশ প্রতিনিধি খোরশেদ আলম শিমুল, দপ্তর সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন, সদস্য মোহাম্মদ পারভেজ, সাইকেল প্রদান কারীর পক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র গ্রন্থাগার সহকারী মো. মিজানুর রহমান (মিন্টু) ও মো. হাবিল্লাহ রনি প্রমুখ।
হকার অজিত দাশ জানান, উপহারটা পেয়ে আমি সত্যিই আনন্দিত। ৪২ বছর পত্রিকা বিক্রি করে জীবনের প্রথম উপহার পেলাম। আগে ভাঙ্গা জরাজীর্ণ একটি বাইসাইকেল করে পত্রিকা বিলি করতে অনেক কষ্ট হতো, এখন নতুন সাইকেল দিয়ে ঘুরে ঘুরে পত্রিকা বিলি করতে পারব। প্রবাসী আনোয়ার আজাদের প্রতি আমি ও আমার পরিবার কৃতজ্ঞ।

