রাতের ভোটে পাহারায় ছিল ওসি, ঘোষণা করেছে ইউএনও: হাসনাত আব্দুল্লাহ

প্রতিনিধি, কুমিল্লা ও দেবিদ্বার উপজেলা
প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২৫, ১০: ৩৬

হাসিনার আমলে রাতে ভোট হতো, আর এ ভোটের পাহারায় ছিল থানার ওসি। আর সন্ধ্যায় ফল ঘোষণা করতেন ইউএনও- এমন মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনি ব্যবস্থার নিয়ম-কানুনও পাল্টাতে হবে। আগের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে রেফারিও গোল দিয়েছে, "র" থানার ওসি-ইউএনওরা আওয়ামী লীগের পক্ষে খেলছে । এ খেলায় যারা ভোট দিতে পারছে তারা ৪০-৫০টা করে ভোট দিয়েছে । রাতেই ভোট শেষ, এমনকি দাদা দাদিরা কবর থেকে উঠেও ভোট দিয়ে গেছে। আর এই ভোটের পাহারায় ছিল থানার ওসি, সন্ধ্যায় ফল ঘোষণা করছে ইউএনও। এ খেলা বন্ধ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৯ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে এলাহাবাদ ইউনিয়নের মোহাম্মদপুরে দেবিদ্বার উপজেলা নাগরিক পার্টি আয়োজিত ‘উঠানে রাজনীতি’ শীর্ষক একটি উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ওই বৈঠকে হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনি ঘোষণা দিন যে খেলার নিয়ম চেঞ্জ হয়েছে। এ খেলার নিয়মের একটি আইনগত ভিত্তি দিন। এরপর আপনি আগামী মাসেই নির্বাচন দিন। আমি নির্বাচিত হই বা না হই আমার দুঃখ নেই। কিন্তু জনগণ যাকে ভোট দিবে সে নির্বাচিত হতে পারবে। এতে আমার কোনো আপত্তি নেই। এর জন্য আমাদের লাগবে একটি নতুন সংবিধান।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, আমরা দেখেছি ভোটের আগে নেতারা ২০০/৫০০ টাকা দিয়ে আপনার আমার মুখ বন্ধ করে রাখতো। এটা আর আমরা হতে দেবো না, সামনে যে নির্বাচন হবে ওই নির্বাচনে আমাদের কিছু শর্ত আছে। ওই শর্তগুলোর লিখিত ভিত্তি দিতে হবে। এটাই রাষ্ট্র সংস্কার। এই দেশ হাজার হাজার মানুষের রক্তে ভেজা। এখানে আমরা মুখের কথা বিশ্বাস করি না। এগুলোর আইনগত ভিত্তি দিয়েই নির্বাচন দিতে হবে। যারা এই নিয়ম ভাঙবে পরবর্তী জেনারেশন যেন তাদের চোখে আঙুল দিয়ে ধরতে পারে। রাষ্ট্রের মধ্যে যত অনিয়ম দুর্নীতি হয় এগুলো সাফারার হয় সাধারণ মানুষ । কোনো মন্ত্রী-এমপি এগুলোর সাফারার হয় না। এমপি সবসময় এমপি হয়, মন্ত্রী সব সময় মন্ত্রী হয়, তাদের ছেলে মেয়েরাও এমপি-মন্ত্রী হয়। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় কিন্তু এই সাধারণ খেটে খাওয়ার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না।

হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, ২০১৩-১৪ সালে ভোটের আগের দিন রাতে ঘরের দরজা টোকা দিত কিছু নেতা, ঘরের ভিতর থেকে আওয়াজ আসত ঘরে আমরা পাঁচজন, এরকমও হয়েছে। তারা রাতের বেলায় ৫০০-১০০০ টাকা দিয়ে আপনার আমার ভাগ্য কিনতো, আর পাঁচ বছর রাস্তাঘাটের কাজে দুর্নীতি-অনিয়ম করত। আমাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে। আমরা আর তাদের টাকার কাছে বিক্রি হবো না, যারা পাঁচ বছর আমাদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে। তারা যে টাকা দিয়ে ভোট কিনে ওই টাকা কোথায় থেকে আসে একবারও কি আপনার মনে প্রশ্ন আসে না! তারা এই টাকা কোথাও না কোথাও থেকে দুর্নীতি করে আনছে। এই টাকা নির্বাচনের পর জনগণের কাছ থেকেই আবার উসুল করবে।

দেবিদ্বার উপজেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক জামাল মোহাম্মদ কবীরের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব এস.এম সাইফ মোস্তাফিজ, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) ডা. মাহমুদা আলম মিতু, দেবিদ্বার উপজেলা সার্চ কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম এবং সদস্য আমির হোসেন।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত