চট্টগ্রামের আলোচিত ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ এবং তার স্ত্রী শারমিন তামান্নাকে খুনসহ আরো দুটি মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফা।
ফেনী ও রাজশাহী কারাগার থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট এলাকায় ছাত্রলীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের হামলায় ফজলে রাব্বী নিহত হওয়ার ঘটনায় করা হত্যা মামলা এবং নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর বাড়ির সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় করা আরেকটি মামলায় সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে বলা হয়, আসামিরা সংঘবদ্ধ অপরাধী ও দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি বিবেচনায় তাদের আদালতে সরাসরি হাজির না করে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির করার আবেদন জানানো হয়, যা আদালত গ্রহণ করেন।
পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, সাজ্জাদের বিরুদ্ধে বর্তমানে ১০টি হত্যা মামলাসহ মোট ১৯টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তার স্ত্রী শারমিন তামান্নার বিরুদ্ধেও একাধিক হত্যা মামলাসহ মোট আটটি মামলা রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে চারটি হত্যা মামলায় উচ্চ আদালত থেকে তারা জামিন পান। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে সেই জামিন আদেশ চট্টগ্রামের আদালতে পৌঁছালে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তবে ওই জামিন আদেশ কার্যকর হওয়ার আগেই নতুন করে তাদের বিরুদ্ধে শ্যোন অ্যারেস্ট আবেদন মঞ্জুর হলো।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানায়, সাজ্জাদ বর্তমানে কারাগারে থাকলেও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর তৎপরতা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। বাহিনীর অন্তত অর্ধশত সদস্য নগরের বিভিন্ন এলাকায় খুন, চাঁদাবাজি, অস্ত্র প্রদর্শন ও আধিপত্য বিস্তারের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। সাজ্জাদের অনুপস্থিতিতে মোহাম্মদ রায়হান, মোবারক হোসেন ইমন, বোরহান উদ্দিন কাদের ও নাজিম বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে পুলিশের ভাষ্য।
এদিকে গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম– ৮ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর গণসংযোগ চলাকালে গুলির ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থলে সরোয়ার হোসেন বাবলা নামের এক সন্ত্রাসী নিহত হন। তার বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা রয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সরোয়ারকে গুলি করা হয়। তবে ভিড়ের মধ্যে গুলি চালানো শুটারকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি। ঘটনার পর থেকে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

