বাবার কবরের পাশে শায়িত ছামীম

স্বামীর শোক না কাটতেই সন্তানের শোক জুলেখার

এম হারুন অর রশীদ, ভেদরগঞ্জ (শরীয়তপুর)
প্রকাশ : ২২ জুলাই ২০২৫, ১৪: ৪৬

জুলেখা বেগমের স্বামীর মৃত্যুর সাতমাসের মাথায় মারা গেছেন ছোটো ছেলে আব্দুল্লা আল ছামীম। স্বামীর শোক কাটতে না কাটতেই সন্তানের শোকে তিনি এখন পাগলপ্রায়। তার ছেলে ছামীম নিহত হন রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায়।

বিজ্ঞাপন

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ডিএমখালি ইউনিয়নের মাঝি কান্দি গ্রামের আকাশ-বাতাসে বইছে ছামীমকে হারানোর শোক। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জানাজা শেসে মাঝিকান্দি গ্রামে বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। ডিএম খালির চরভয়রা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জুলেখা বেগম বলেন, আমার মানিককে ডাক্টার বানানোর স্বপ্ন নিয়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি করেছিলাম। আমার সে স্বপ্ন বিমান বিধ্বস্তের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেলো। আমার মানিন কি যে কষ্ট নিয়ে চলে গেলেন! হে আল্লাহ আমি আর বলতে পারছি না। ছোটবেলা থেকে ভীষণ মেধাবী ছিল আমার ছেলে। ওর স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে চিকিৎসক হবে।

নিহতের চাচা ডিএমখালি শহীদ সিরাজ সিকদার কলেজের শিক্ষক মো. মোতালেব হোসেন মাঝি জানান, ছামীম ছিলো ৩ ভাইবোনের মধ্যে ছোট। তার বাবা কামাল উদ্দিন মাঝি সৌদি আরব প্রবাসী ছিলেন। ৭ মাস হলো তিনি মারা গেছেন। ২ ভাই, ১ বোন নিয়ে তার মা রাজধানির উত্তরায় বসবাস করতেন। বড় ছেলে এলএলবি অধ্যায়নরত আর বোন তার পড়ালেখা শেষ করেছে।

নিহতের মামা সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম বলেন, ছোট ভাগিনাকে পরিবারের সবাই অনেক ভালো বাসতাম। মহান আল্লাহ আমাদের পরিবারের হাসি ও আনন্দের উপহার হিসেবে এ ভাগিনাকে পাঠিয়ে ছিলেন। তিনিই আবার আমাদের সবাইকে শোক সাগরে ভাসিয়ে ওকে নিয়ে গেলেন। এ শোক ওর মা কিভাবে সইবে জানিনা। আল্লাহ ছামীমকে যেন জান্নতবাসী করেন।

বুকের মানিক হারিয়ে নিহতের মা জুলেখা বেগম পাগল প্রায়। তার করুন আত্মনাথে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।

এ ব্যাপারে ভেদরগঞ্জের (ভারপ্রাপ্ত) উপজেলা নির্বাহী মোহাম্মদ মোজাহেরুল হক বলেন, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা নিহতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে আমরা সব সময় থাকবো।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত