আত্মসাতের অভিযোগে সেই অধ্যক্ষের নামে নবাবগঞ্জেও মামলা

উপজেলা প্রতিনিধি, দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা)
প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭: ৫০

নবাবগঞ্জের একটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চেক জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ‘নবাবগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ’-এর সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজমুন আখতারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে নবাবগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাকির হোসেন মিয়া।

বিজ্ঞাপন

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে নাজমুন আখতার ইউএনও দিলরুবা ইসলামের স্বাক্ষর নকল করে বিভিন্ন সময়ে স্কুলের ব্যাংক হিসাব থেকে চেক ব্যবহার করে অর্থ উত্তোলন করেছেন।

তদন্ত কমিটি তিনটি চেকে মোট ১২ লাখ ৮১ হাজার টাকা উত্তোলনের প্রমাণ পেয়েছে। এছাড়া গত ২৫ আগস্ট আইএফআইসি ব্যাংক শাখা থেকে একটি চেক ব্যবহার করে ৭ লাখ টাকা উত্তোলন এবং কমিউনিটি ব্যাংকের হিসাব থেকে দুই দফায় মোট ৫ লাখ ৮১ হাজার টাকা উত্তোলনের তথ্যও পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, ৩ সেপ্টেম্বর সাবেক অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত গাড়ীচালক মো. জসিম উদ্দিন কমিউনিটি ব্যাংক নবাবগঞ্জ শাখার এক লাখ ৭০ হাজার টাকার একটি চেক হাতে গুলশান শাখায় গিয়ে লেনদেন করতে গেলে ব্যাংক কর্মকর্তারা সন্দেহজনক স্বাক্ষর দেখতে পেয়ে লেনদেন স্থগিত করেছিলেন। পরে স্বাক্ষর যাচাই-বাছাই করলে জালিয়াতির আলামত পাওয়ায় চালককে আটক করে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয় এবং একটি মামলা হয়। বিষয়টি ইউএনওর নজরে আসলে ৪ সেপ্টেম্বর গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশে প্রশাসন নাজমুন আখতারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তাকে অপসারণ করেন।

পরে ১১ সেপ্টেম্বর নবাবগঞ্জে গঠিত একটি তদন্ত কমিটি বিদ্যালয় ঘেঁটে নাজমুন আখতারের ব্যবহৃত কাগজপত্র রাখার লকার ভেঙ্গে চেকবই উদ্ধার করার সময় লকার থেকে কমিউনিটি ব্যাংকের চেকবইয়ের পাঁচটি পাতা ও আইএফআইসি ব্যাংকের চেকবইয়ের ৩টি পাতা পাওয়া যাওয়া যায়নি—এমন তথ্যও মামলার বিবরণে উল্লেখ আছে।

মামলায় সাবেক অধ্যক্ষ নাজমুন আখতারের মেয়ে আশফিয়া রহমান ও গাড়ীচালক জসিম উদ্দিনসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত ও গ্রেপ্তারের কাজ করছে পুলিশ—নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, চেক জালিয়াতিতে জড়িতদের ছাড়া হবে না এবং গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাকির হোসেন মিয়া বলেন, পরিচালনা কমিটির নির্দেশেই বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতের এ ঘটনার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, চেকবইয়ের ৮টি পাতা পাওয়া যায়নি; খোঁজ করলে আরো অনিয়ম বেরিয়ে আসতে পারে।

উপজেলার ইউএনও দিলরুবা ইসলাম বলেন, চুরি হওয়া চেক পাতার সন্ধান না পেলে মামলার তদন্তে বেরিয়ে আসা তথ্য অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এলাকাবাসী ও বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা দ্রুত তদন্ত দাবি করছেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত