পাঁচ মাস পরিষদে নেই সাবেক মন্ত্রীর মামাতো ভাই ইউপি চেয়ারম্যান: ভোগান্তি চরমে

উপজেলা প্রতিনিধি, সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ)
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯: ১৯

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা নয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। হরগজ ইউনিয়ন পরিষদ একটি গ্রাম নিয়ে একটি ইউনিয়ন। এই ইউনিয়ন পরিষদের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান ছিলেন আনোয়ার হোসেন খান জ্যোতি। তিনি আওয়ামী সরকারের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের মামাতো ভাই এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি।

৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনার পতন ও পলায়নে, ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকে হরগজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কয়েকদিন আত্মগোপনে ছিলেন। পরবর্তীতে মাঝে মধ্যে পরিষদ কার্যালয়ে গেলেও গত ২ মার্চ ২০২৫ থেকে পরিষদে অনুপস্থিত। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বারবার ছুটিতে যাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১৩ হাজার জনসংখ্যা অধ্যুষিত ঐতিহ্যবাহী হরগজ ইউনিয়নের জনসাধারণ রয়েছে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত। বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে দোর্দান্ত, প্রভাবশালী মন্ত্রীর ভাই জনরোষ এবং গ্রেপ্তার এড়াতে রয়েছে আত্মগোপনে। আত্মগোপন থেকে পরিষদের চৌকিদার মারফত বিভিন্ন রেজুলেশন খাতা, ওয়ারিশ সনদ, চারিত্রিক সনেদে স্বাক্ষর দিয়ে টিকিয়ে রেখেছেন চেয়ারম্যান নামক পদটি।

ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, ২০২৫ সালের ২ মার্চ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৫ ধাপে ছুটি নিয়েছেন অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়ে। কিন্তু অসুস্থতার কোনো কাগজপত্র, ডাক্তারি সার্টিফিকেট জমা দেননি। অভিযোগ আছে ভোট ছাড়াই ৯ জন ইউপি সদস্যের মধ্যে তিনজন মহিলা ইউপি সদস্যদের জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে নিজের পছন্দের ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম কে প্যানেল চেয়ারম্যান বানানোর।

ইউপি সদস্য আব্দুল আউয়াল জানান, প্যানেল চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের কথা বলে নির্বাচন না করে চেয়ারম্যান দাপট দেখিয়ে ২০২৫ সালের ১ মার্চ তারিখে পরিষদের অন্যান্য সদস্যদের রেজুলেশন খাতায় জোর করে সই করালেও আমি, আবুল মেম্বার, মোশারফ মেম্বার সই করি নাই। প্যানেল চেয়ারম্যান পদে আমি একজন প্রার্থী ছিলাম।

ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ফারুক হোসেন জানান, ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিনি ছুটি নিয়েছেন। নির্ধারিত সময়ের পর তিনি পরিষদের দায়িত্ব নিবেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মন্ত্রীর মামাতো ভাই পরিচয়ে ভুয়া প্রকল্প, টিআর, কাবিখা, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, হাটবাজার নিয়ন্ত্রণ, ড্রেজারদিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে হয়েছেন শত কোটি টাকার মালিক।

স্বাস্হ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক নিজের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য ভিন্ন মত দমনে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে মাসের পর মাস কারাগারে আবদ্ধ করে রাখতেন।আর এ সবই করাতেন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে। এলাকার অর্ধডজন ভুক্তভোগীর অভিযোগ, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা,বিধবা ভাতা,গর্ভকালীন ভাতা দিতেন নিজের পছন্দের লোকদের।

মন্ত্রীর ভাতিজা হওয়ার সুবাদে চেয়ারম্যানের পুত্র মুহিত খান চাকরি পেয়েছিলেন সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেন্সিয়াল ড্রাগসে। অপর দিকে দখলে নিয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির পদ। সাবেক স্বাস্থ্যমন্রীর ভাতিজা হওয়ার সুবাদে সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রতিদিনের খাবার সরবরাহের কাজটি নিয়ে ছিলেন নিজের নামে।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর চেয়ারম্যানের নামে কয়েকটি মামলা হওয়ায় তিনি ও তার ছেলে পলাতক আছেন। মূলত গ্রেপ্তার এড়াতে পরিষদে অনুপস্থিত থেকেও চেয়ারম্যান নামক পদটি টিকিয়ে রেখেছেন। ফলে অত্র ইউনিয়নের বাসিন্দারা রয়েছেন তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।

অসদাচারণের দায়ে টঙ্গী পাইলট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

গুম-খুনে জড়িত ১৫ সেনা কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত। ট্রাইব্যুনালে হাজির। সাবজেলে প্রেরণ

এবার ১ টাকায় গরুর মাংস বিতরণের ঘোষণা সেই এমপি প্রার্থীর

অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বহন করা সেই প্রিজন ভ্যানে কী আছে

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত