আশুলিয়া সাব রেজিস্ট্রার অফিসে তিন সপ্তাহ ধরে অচলাবস্থা

স্টাফ রিপোর্টার, সাভার
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৫, ১৯: ০৯

দলিল লেখকদের আন্দোলনে সাভারের আশুলিয়া সাব রেজিস্ট্রার অফিসে গত তিন সপ্তাহ ধরে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সাব রেজিস্ট্রারের ঘুষ দুর্নীতির প্রতিবাদ ও প্রত্যাহার দাবিতে ১৯ জুন থেকে তারা এ কর্মসূচি পালন করে আসছে। কেউ যেন সেবা নিতে না পারে সেজন্য বসানো হয়েছে পাহারা।

প্রতিদিন শতাধিক ভূমি রেজিস্ট্রেশন হলেও এখন দৈনিক ২০-২২টি দলিল হচ্ছে। মারধর ও হেনস্থার শিকার হচ্ছেন সেবাগ্রহীতাদের। এতে বিপাকে পড়েছেন ভূমি ক্রেতা-বিক্রেতারা। অন্যদিকে কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

বিজ্ঞাপন

সাব রেজিস্ট্রার খায়রুল বাশার ভুইয়া পাভেল জানান, সমিতির নামে কয়েকজন দলিল লেখক উদ্দেশ্যমূলকভাবে অফিসের কার্যক্রমে অচল অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। অপরদিকে দলিল লেখক সমিতির আহ্বায়ক জানান, সাব রেজিস্ট্রারের ঘুষ দুর্নীতির প্রতিবাদসহ তার প্রত্যাহারের দাবিতে তারা কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

খায়রুল বাশার ভুইয়া জানান, সমিতির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে দাগ খতিয়ান পরিবর্তন করে খাজনা পরিশোধ করেছেন এবং সেই কাগজ পত্র নিয়ে ভ্রম সংশোধন দলিল সম্পাদন করতে এসেছিলেন। এ ছাড়া কিছু দলিল লেখক শ্রেণি পরিবর্তন করে ফি কম দিতে চাচ্ছেন। এ সব অন্যায় কাজে অপারগতা জানালে তারা সরকারি কাজে বাধার সৃষ্টি করছেন।

তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে ভূমি রেজিস্ট্রেশন করতে আসা লোকজনকে বাধা দেয়া হচ্ছে। কয়েকজনকে মারধর করে আহত করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে ডাচ বাংলা ব্যাংকের স্থানীয় শাখা কর্মকর্তা আমির হোসেন আশুলিয়া থানায় ঘটনা উল্লেখ করে অভিযোগ দায়ের করেন। সাব রেজিস্ট্রার অফিস ভবনের দোতলায় সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাদের ভূমি রেজিস্ট্রেশনের জন্য আসা সেবা গ্রহীতাদের পে অর্ডার করতে নিষেধ করা হচ্ছে।

বাধা প্রদান ও মারধরের বিষয়টি সম্পর্কে ব্যাংক কর্মকর্তা আমির হোসেনের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, ঘটনার দিন ব্যাংকের মর্গেজ দলিল রেজিস্ট্রেশন করে সাব রেজিস্ট্রার অফিস হতে বের হলে আমাকে ১০/১২ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি মারধর করে আহত করে। এ বিষয়ে আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি।

অভিযোগ সম্পর্কে সোনালী ব্যাংক আশুলিয়া শাখার ম্যানেজার (এসপিও) ফেরদৌসী মমতাজ জানান ব্যাংকটির এ শাখা সাব রেজিস্ট্রার অফিসের দোতলায় করা হয়েছে মূলত পে অর্ডার ও ভূমি রেজিস্ট্রেশন সেবাদানের জন্য। চলমান এ অবস্থায় লেনদেন খুবই কম হচ্ছে। বিষয়টির সুরাহা হওয়া দরকার।

দলিল লেখক সমিতির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সত্য নয়। সাব রেজিস্ট্রারের অসৌজন্যমূলক আচরণ, ঘুষ-দুর্নীতির প্রতিবাদে তারা কলম বিরতি, মানববন্ধন, বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার মুন্সী মোখলেসুর রহমানের বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার ফোন করেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে তিনি এ পরিস্থিতির শুরুর দিকে দুই পক্ষকে নিয়ে বসেছিলেন কিন্ত সমাধান করতে পারেননি।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত