মুক্তিপণ পরিশোধের মাধ্যমে অপহরণকারীদের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছেন সাত জেলে।
বৃহস্পতিবার রাতে আড়াই লাখ টাকা বিকাশের মাধ্যমে দেয়ার পর দুষ্কৃতকারীরা তাদের ছেড়ে দেয়।
ফিরে আসা জেলেরা হলেন শ্যামনগর উপজেলার মীরগাং গ্রামের সাকাত সরদারের ছেলে মো. ইব্রাহিম, পারশেখালী গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে আব্দুল হামিদ, টেংরাখালী গ্রামের সুজন মুন্ডার ছেলে সুজিত, কালিন্চি গ্রামের কেনা গাজীর ছেলে রকিবুল ইসলাম, কেউবাচলির আব্দুস সাত্তারসহ কালিন্চি কলোনি পাড়ার আরো দু’জন।
এর আগে সোমবার ও মঙ্গলবার পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের দাড়গাং এলাকার খাল থেকে কাজল বাহিনী নামের ছয় সদস্যের একটি জলদস্যু দল তাদের অপহরণ করে নিয়ে যায়। মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করলেও পরে পরিবারের সদস্যদের অনুনয়ে ৩৫ হাজার টাকা করে মেনে নেয় জলদস্যুরা। সাতজনের মোট দু’লাখ ৪৫ হাজার টাকা ও অতিরিক্ত খরচ বাবদ আরো পাঁচ হাজার মিলে মোট আড়াই লাখ টাকা দেয়ার পর বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে তারা বাড়ি ফেরেন।
ইব্রাহিমের চাচা সাহেব আলি জানান, ১ সেপ্টেম্বর থেকে মাছ ধরার মৌসুম শুরু হবে। জাল-নৌকা মেরামতের সব খরচ মিটিয়ে তারা সুন্দরবনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এর মাঝেই অপহৃত হয়ে পড়ায় মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়েছে। জলদস্যুরা জানিয়েছে, আগামী দু’মাসের মধ্যে আবার বনাঞ্চলে প্রবেশ করলে নতুন করে মুক্তিপণ দিতে হবে না।
অপহৃত জেলে সুজিত বলেন, আমাদের মারধর করা হয়নি। শুরুতে ৫০ হাজার টাকা করে দাবি করলেও পরে ৩৫ হাজারে সমঝোতা হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ লালটু জানান, অপহরণের শিকার জেলেরা বাড়ি ফিরেছেন। এর মধ্যে পাঁচজনের নাম জানা গেলেও আরও দুজন কালিন্চি কলোনি পাড়ার বাসিন্দা।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক বলেন,ঘটনার বিষয়ে আমরা লোকমুখে শুনেছি। মৌসুম শুরুর আগে থেকেই জলদস্যু দমনে স্মার্ট পেট্রোল টিমসহ একাধিক গ্রুপ মাঠে কাজ করছে।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির মোল্লা জানান, জেলেদের ফিরে আসার বিষয়টি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশকে জানানো হয়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
সুন্দরবনে মৌসুম শুরুর আগেই জলদস্যুদের এমন তৎপরতা আবারও জেলেদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

