ফুচকা খেয়ে হাসপাতালে ২০০ মানুষ

যশোর অফিস ও অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৫: ২৫

যশোরে ঈদের দিন খাদ্যে বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন প্রায় দুইশ মানুষ। নজিরবিহীন এই অবস্থার সৃষ্টি হয় অভয়নগরের পল্লিতে ঈদমেলায় ফুচকা খেয়ে।

বিজ্ঞাপন

অসুস্থদের খুলনা ও অভয়নগরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যে স্টল থেকে থেকে ফুচকা খেয়ে এতো বিপুল সংখ্যক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, পুলিশ এখনও সেটির মচলিকের নাগাল পায়নি।

স্থানীয়রা জানান, অভয়নগর উপজেলার দেয়াপাড়া গ্রামের দক্ষিণ দেয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ঈদ উপলক্ষে কয়েক বছর ধরে ঈদমেলা হয়। এ বছর ঈদের দিন বিকেলে চার দিনব্যাপী ঈদমেলা শুরু হয়েছে। মেলায় শত শত মানুষের আগমন ঘটে। সেখানে হরেকরকম খাবারের দোকানও বসে। যশোর সদর উপজেলার রূপদিয়া এলাকা থেকে মনির হোসেন নামে এক ব্যক্তি মেলায় অস্থায়ী ফুচকার দোকান দিয়েছিলেন। মেলায় আসা অনেক মানুষ বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেই দোকান থেকে ফুচকা খান। খাবার গ্রহণকারীরা কিছুসময় পর থেকে অসুস্থ হতে থাকেন। তারা পেটব্যথা, বমি, পাতলা পায়খানা, খিঁচুনি ও জ্বরে আক্রান্ত হন।

বুধবার সবশেষ হিসেব অনুযায়ী এ পর্যন্ত প্রায় ২০০ নারী, পুরুষ ও শিশু অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলীমুর রাজীব এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আলীমুর আরও জানান, ঈদের দিন বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দেয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ফুচকা খেয়ে লোকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে ১৬০ জনকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আশঙ্কাজনক হওয়ায় ৩০ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নড়াইল সদর উপজেলার তপনবাগ গ্রামের ইব্রাহিম শেখের দুই মেয়ে রিমা খাতুন (২৮) ও আয়শা খাতুন (২৪) মেলায় এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে আয়শা খাতুনের দুই ছেলে মোহাম্মদ আলী (৭) ও ওমর সরকারও (৫) ছিল। রাত সাড়ে আটটার দিকে তারা ওই দোকান থেকে ফুচকা খান। পরে রাতে বাড়ি ফিরে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার সকালে তাদের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

আয়শা খাতুন বলেন, রাতে বাড়ি ফেরার পর সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ি। মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।

সাইফুল ইসলাম বাপ্পী নামে একজন বলেন, আমি বাদে পরিবারের সবাই সোমবার রাতে ঈদমেলায় গিয়ে ওই দোকান থেকে ফুচকা খায়। রাতে বাড়ি আসার পর সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ে। রাতে সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলীমুর রাজীব বলেন, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত বিপুল সংখ্যক মানুষ ঈদের দিন থেকে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশি। তবে বয়স্ক নারী-পুরুষও রয়েছেন। স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, যে দোকান থেকে ফুচকা খেয়ে এতো বিপুল সংখ্যক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, স্থানীয়রা তাকে শনাক্ত করেছেন। তিনি যশোর সদর উপজেলার রূপদিয়া এলাকার মনির হোসেন। ঘটনার পরপরই এই মৌসুমি ব্যবসায়ী পালিয়ে গেছেন। সে জন্য ঠিক কী কারণে খাদ্যে বিষক্রিয়া হলো, তা এখনও অজানা।

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আলিম বলেন, আমরা ফুচকা ব্যবসায়ী মনিরকে খুঁজছি।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত