ধর্ষণের দায়ে যবিপ্রবির সাবেক ছাত্রের যাবজ্জীবন

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১৪: ৩৮

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক ছাত্র মাশরুর রহমান সজীবকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) আতোয়ার রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

সাজাপ্রাপ্ত মাশরুর রহমান সজীব যশোর শহরের পালবাড়ি তেঁতুলতলার বাসিন্দা মিজানুর রহমানের ছেলে এবং বর্তমানে রাজধানীর বাড্ডা এলাকার বৈশাখী সরণীর বাসিন্দা। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের বিশেষ পিপি আব্দুল লতিফ লতা।

মামলার সূত্র অনুযায়ী, ২০১৩ সালে ওই কলেজছাত্রী যশোর শহরের একটি কলেজে ভর্তি হন এবং তার ফুফুর বাড়িতে থাকতেন। সেই সময় তার ফুফাতো বোনকে পড়ানোর জন্য গৃহশিক্ষক হিসেবে আসতেন যবিপ্রবির তৎকালীন ছাত্র সজীব। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

২০১৬ সালের ১৫ জুন বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে সজীব ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর তাদের সম্পর্ক উভয় পরিবারে জানাজানি হয়ে যায়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সজীব মেয়েটিকে বিভিন্ন ভ্রমণ স্থানে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিতেন। এমনকি তিনি গোপনে তাদের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখেন।

যখন মেয়েটি বিয়ের জন্য চাপ দিতে শুরু করেন, তখন সজীব তার সাথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। ২০২৪ সালের ৩০ জুলাই সজীবের মাকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে তার ছেলে ওই মেয়েকে বিয়ে করবে না। শুধু তাই নয়, তিনি আরও জানান যে সজীব ইতিমধ্যে অন্য একজনকে বিয়ে করেছেন।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১৭ আগস্ট ওই ছাত্রী যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।

আদালতের তৎকালীন বিচারক অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি সজীবকে অভিযুক্ত করে ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন।

সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আসামি মাশরুর রহমান সজীবের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এরপর বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ২৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

রায় ঘোষণার সময় সজীব আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত