মসজিদের পাশেই মন্দিরে পূজা উৎসব, নেই কোনো বিদ্বেষ

জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৪৮

একই আঙ্গিনার এক প্রান্তে মসজিদ বিপরীত প্রান্তে মন্দির, মসজিদে নামাজের ওয়াক্তে মুসল্লীরা নামাজ আদায় করছেন, পূজার সময় শঙ্খ আর উলুধ্বনিতে হিন্দুরা করছেন পূজা অর্চনা।

নড়াইল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের মহিষখোলা এলাকায় সাবেক সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস প্রাঙ্গনে এভাবেই ৪ দশকেরও বেশি সময় ধরে যার যার ধর্ম পালনের মধ্য দিয়ে হিন্দু মুসলমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুবাতাস প্রবাহিত হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

এলাকাবাসী জানায়, ১৯৮১সালে কয়েক মাসের ব্যবধানে একই আঙ্গিনার ২০ গজের মধ্যে স্থাপিত হয় পুরাতন সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস জামে মসজিদ ও মহিষখোলা সার্বজনীন পূজা মন্ডপ। সেই থেকেই সারাবছর মসজিদে আজান সহকারে নামাজ আদায় হচ্ছে, বছর বছর উদযাপিত হচ্ছে হিন্দুদের সবচেয়ে বড়ো ধর্মীয় উৎসব দূর্গোপূজা, বছর জুড়ে পালন হচ্ছে নানা পূজা পার্বণও। আজানের সময় বাজেনা শঙ্খ, হয় না উলুধ্বনি, নামাজ শেষে পূজা অর্চনা চন্ডিপাঠ ঢাক কাঁসা ঘন্টা বাজানোতেও নেই কোনো প্রতিবন্ধকতা। কারো সঙ্গে কোনো বিভেদ নেই, নেই কোনো ক্ষোভ-আক্ষেপ, নেই ভুল বোঝাবুঝি। এলাকার হিন্দু-মুসলিম পরস্পর বুঝাপড়া সৌহার্দের মাঝে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে চলেছে নিরাপদে নিঃশঙ্ক চিত্তে।

একই আঙ্গিনায় এতো কাছাকাছি মন্দির মসজিদের অবস্থান বিরল উল্লেখ করে জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাবেক সভাপতি অশোক কুমার কুন্ডু বলেন, এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা সহমর্মিতা কারণেই মসজিদ মন্দির এতোটা নিকটে কোনো প্রকার বিবদে ছাড়া নির্বিগ্নে যে যার ধর্ম পালন সম্ভব হচ্ছে, এ জন্য আমি মুসলমান ভাইদের ধন্যবাদ জানাই। আমাদের মাঝে এই সৌহার্দ সম্প্রীতি বন্ধন আগামীতেও বজায় থাকবে।

জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মো. আতাউর রহমান বাচ্চু বলেন, নড়াইল শহরের মহিষখোলায় একই আঙ্গিনায় মসজিদ-মন্দির এ জেলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের পরিচায়ক, এভাবে পরস্পর সহঅবস্থান ও একে অপরকে জানা বোঝার মধ্য দিয়ে এখানে হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির মেলবন্ধন রচিত হয়েছে, এ বন্ধন ভবিষ্যতেও অটুট থাকবে।

উল্লেখ্য, নড়াইল জেলায় মসজিদের গা-ঘেষে এমন আরও ১৪ থেকে ১৫টি মন্দির রয়েছে। এতে নেই কোনো ধর্মীয় বিদ্বেষ। হিন্দু-মুসলিম পরস্পর বুঝাপড়া সৌহার্দের মাঝে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে চলেছে নিরাপদে নিঃশঙ্ক চিত্তে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত