গৌরীপুর-বেখৈরহাটী সড়কে বাড়ছে দুর্ভোগ ও দুর্ঘটনা

মো. কামাল উদ্দিন, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৫, ০৪: ২২
ছবি: আমার দেশ

ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর এলাকাধীন গৌরীপুর-বেখৈরহাটী জিসি সড়কের বেহাল দশা বিরাজ করছে। এ সড়কে প্রতিনিয়ত ভারী যানবাহন চলাচল ও অতি বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতায় যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রীসাধারণ। জীবন ও জীবিকার টানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন যাত্রীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গৌরীপুর পৌর এলাকাসহ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া, মদন, খালিয়াজুরী ও আটপাড়া উপজেলার হাজারো যাত্রীসাধারণের ঢাকা, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ ও ভৈরব-সিলেটগামী যাতায়াতের অন্যতম সড়ক এটি। দফায় দফায় মেরামত করা হলেও দুর্নীতি, অনিয়ম আর নিম্নমানের কাজের জন্য টেকসই হচ্ছে না সড়কটি। ফলে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় খানাখন্দ আর জলাবদ্ধতায় প্রায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটির পৌর এলাকার বালুয়াপাড়া বাজার থেকে পূর্বদিকে বোকাইনগর ইউনিয়ন অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে অতি বৃষ্টির ফলে বড়বড় গর্তে জলাবদ্ধতায় পরিণত হয়েছে। এ সড়কে ট্রলিচালক সিরাজ মিয়া জানান, তিনি গত বুধবার ধানবোঝাই ট্রলি নিয়ে যাওয়ার পথে পৌর এলাকার বালুয়াপাড়া নামক স্থানে গর্তে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। এতে তার প্রায় দশ হাজার টাকার মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার দুপুড়ে সামিয়া আক্তার পরিবহন নামের যাত্রীবাহী অটোরিকশাটি খানাখন্দে পড়ে গিয়ে প্রায় উল্টে পড়ে । পরে স্থানীয়দের সহায়তায় বড় ধরনের বিপদ থেকে উদ্ধার হয়। অটোরিকশাচালক ইসলাম বলেন, আমি এ সড়কের নিয়মিত অটোচালক, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় দির্ঘদিন ধরে এ সড়কে চলাচলকারী মানুষজন প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। যেন দেখার কেউ নেই। স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলাম ও স্থানীয় শিক্ষার্থী রাজন জানান, কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য এ সড়কের বেহাল দশা প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছাড়াও যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর এর বিভিন্ন ভিডিও পাঠানো হয়েছে। গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জিওবি প্রকল্পের আওতায় মেসার্স জামির ট্রেডার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০২০ সালে রক্ষণাবেক্ষণ খাতে পাঁচ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সড়কের সংস্কার করে। এরপর গৌরীপুর পৌরসভা ও স্থানীয় উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা নিজ উদ্যোগে এর বিভিন্ন খানাখন্দ বিভিন্ন সময়ে ভরাট করলেও পরিকল্পিত না হওয়ায় তা বেশি দিন টিকেনি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, সড়কটির গুরত্ব বিবেচনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে কথা বলে জরুরি ভিত্তিতে একটি প্রকল্প স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিয়া আমীন পাপ্পা বলেন, সড়টির বিভিন্ন খানাখন্দকে জলাবদ্ধতায় যাত্রীসাধারণের চলাচলে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এটি মেরামতের জন্য ইতোমধ্যে একটি প্রকল্প ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। তবে জরুরি ভিত্তিতে যাত্রী সাধারণের সুবিধার্থে সাময়িক সময়ের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি।

পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুনন্দা সরকার প্রমা বলেন, সড়কটি যান চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এটি এলজিইডির তত্ত্বাবধানে আছে। তবে জরুরি ভিত্তিতে পৌরসভার তত্ত্বাবধানে এ সড়কে খানাখন্দ ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণে সাময়িক সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যেই পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীকে আদেশ দিয়েছি। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যেই জনভোগান্তি কমে আসবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত