রিকশাচালক বাবাকে নির্যাতনের প্রতিবাদ করায়

ভালুকায় খেলনা পিস্তল ধরিয়ে দিয়ে শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ

উপজেলা প্রতিনিধি, ভালুকা (ময়মনসিংহ)
প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২৫, ১৬: ৩৫
আপডেট : ১৫ জুন ২০২৫, ১৭: ০২

ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের জামিরদিয়া এলাকায় দু'শিক্ষার্থীর হাতে খেলনা পিস্তল ধরিয়ে দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে মেহেদী হাসান নামে এক ব্যবসায়ী পুলিশে সোপর্দ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

সাজানো অভিযোগের ভিত্তিতে দু'শিক্ষার্থীকে আটক করে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করে ভালুকা থানা পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে এলাকাবাসী সাজানো মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার উপজেলার জামিরদিয়ার মাস্টারবাড়ী এলাকায়।

স্থানীয় ও পারিবার সূত্রে জানা যায়, কোরবানী ঈদের আগের দিন ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া বাদশা টেক্সটাইল মিলের দু'নম্বর গেটের সামনে শিক্ষার্থী সিফাতের বাবা রিকশাচালক সাইফুল ইসলাম মামলার বাদির ভাই আল আমিনের স্ত্রীকে একটি গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার কথা বলেন। এতে রিকশাচালক সাইফুল না গেলে আল আমিন তার ভাই শামীম ও মেহেদী হাসানকে দিয়ে সাইফুলকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করেন। রিকশাচালক সাইফুলের ছেলে ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সিফাত বিষয়টি জানতে পেরে তার সহপাঠি সাদেকুলকে নিয়ে মামলার বাদি মেহেদী হাসানের দোকানে যান এবং আল আমীনের কাছে জানতে চান কেন তার বাবাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। সেখানে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে সিফাত দোকানের শোকেসের গ্লাসে লাথি মারেন। এ সময় দোকান মালিক আল-আমীন, তার ভাই মেহেদী ও দোকানের কর্মচারীরা দু'শিক্ষার্থীকে ধরে ফেলেন। পরে দোকান থেকে খেলনা পিস্তল হাতে ধরিয়ে দিয়ে তাদের আটকে রেখে 'ডাকাত' 'ডাকাত' বলে চিৎকার শুরু করেন এবং পুলিশে খবর দেন। এতে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দু'শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে দোকান মালিক আল-আমীনের ভাই মেহেদী হাসান সিফাত ও সাদিকুলের বিরুদ্ধে পিস্তল দেখিয়ে চাঁদা দাবি ও দোকান ভাঙচুরের অভিযোগ এনে ভালুকা মডেল থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করেন। ওই সাজানো মিথ্যা মামলায় শিক্ষার্থীদের জেল হাজতে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হলে পরদিন শুক্রবার এলাকাবাসী মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

শিক্ষার্থী সিফাতের বাবা সাইফুল ইসলাম জানান, আল আমীন তার পূর্ব পরিচিত। তার স্ত্রীকে রিকশায় করে গন্তব্যে নিয়ে যেতে পারেননি, এজন্য তাকে প্রকাশ্যে মারধর করা হয়েছে। ছেলে প্রতিবাদ করতে তার দোকানে গেলে খেলনা পিস্তল দিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এলাকাবাসী হারুন-অর-রশিদ জানান, সিফাত ও সাদিকুল ভদ্র ও শান্ত ছেলে হিসেবে পরিচিত। তারা কখনোই এমন কাজ করতে পারে না। এলাকাবাসীর দাবি, ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো।

মামলার বাদি মেহেদী হাসান জানান, ওই দুই শিক্ষার্থী তার দোকানে এসে দোকানের শোকেসের উপর পিস্তল রেখে চাঁদা দাবি করে। পরে তাদেরকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তাদের আটক করে।

ভালুকা মডেল থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান,‘ বাদির অভিযোগের ভিত্তিতে আটক করা হয়েছে। পরে বাদি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে দ্রুত বিচার আইনে মামলা রজু করা হয়। ওই মামলায় দু'কিশোরকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাদেরকে শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে পাঠিয়েছেন।’

এমএস

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত