জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে স্থানীয়দের অনুদানে চলা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ঈমামের নিকট চাঁদা না পেয়ে এক মাস যাবৎ মাদ্রাসা বন্ধের অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে উপজেলার আওনা ইউনিয়নের স্থল হাজীবাড়ি জামে মসজিদ হেফজ ও এতিমখানায় এ চাঁদা দাবির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দাবি করা ৩০ হাজার টাকা চাঁদা না দেওয়ায় মাদ্রাসার বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করে দেওয়ায় প্রায় ২০ শিক্ষার্থীর ধর্মীয় পড়াশোনা বন্ধ রয়েছে। উপজেলার আওনা ইউনিয়নের স্থল হাজীবাড়ি জামে মসজিদ হেফজ ও এতিমখানার ঈমাম হাসান আলীর কাছে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন একই গ্রামের আবু ইসলাম সাদ্দাম নামের এক ব্যক্তি। ইমাম চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি মাদ্রাসার বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ বন্ধ করে দেন, ফলে প্রায় ২০ শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়।
মসজিদের ঈমাম হাসান আলী মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার কাছে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছিল। পরে ভয়ে মাদ্রাসা ছেড়ে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়েছি।’
স্থানীয়দের মতে, সাদ্দাম বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর তিনি বিএনপিতে যোগ দেন এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজির মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়েছেন বলে অভিযোগ তাদের।
হাজীবাড়ি পরিবারের সাত ভাইবোন আমেরিকা প্রবাসী। তাদের আর্থিক সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে এতিমখানা ও হেফজখানাটি পরিচালিত হয়ে আসছে। স্থানীয়রা জানান, এই পরিবার দরিদ্র শিক্ষার্থী, অসহায় ও অসুস্থ মানুষের সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এলাকার বাসিন্দারা আরও জানান, গত ৫ আগস্ট আমেরিকা প্রবাসী আখতারুজ্জামান জুগলু দেশে আসলে তার কাছেও ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন অভিযুক্ত সাদ্দাম। পরে তিনি আতঙ্কে দ্রুত আমেরিকায় ফিরে যান। ফলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, প্রবাসী পরিবারের অনুদান বন্ধ হয়ে গেলে এলাকার দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হবে।
প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বে থাকা আল আমিন বলেন, ‘এই ঘটনায় এলাকার মুসল্লি ও সচেতন মানুষদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা দ্রুত মাদ্রাসাটি পুনরায় চালু করে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুযোগ ফিরিয়ে আনার দাবি জানাই।’
অভিযুক্ত আবু ইসলাম সাদ্দামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ রাশেদুল হাসান রাশেদ বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

