রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচ তএম খায়রুজ্জামান লিটনের চাচাতো ভাইয়ের কোচিং সেন্টার থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী।
এ সময় তিনজনকে আট করা হয়। আটক ব্যক্তিরা হলেন, কোচিং সেন্টারটির মালিক মুনতাসিরুল অনিন্দ্য এবং তার দুই কর্মচারী রবিন ও ফয়সাল।
গত শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে থেকে শনিবার বেলা আড়াইটা পর্যন্ত মহনগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার করা হয়। অভিযান পরিচালনা করে সেনাবাহিনীর ৪০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি দল। পরে এ অভিযানে যোগ দেয় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) একটি দল।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, কোচিং সেন্টারটির মালিক মুনতাসিরুল অনিন্দ্য রাসিকের অপসারিত ও পলাতক সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের চাচাতো ভাই। এটি ছিল লিটনের চাচা রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহফুজুর রহমান লোটনের বাড়ি-সংলগ্ন। ‘ডক্টর ইংলিশ’ নামের এই কোচিং সেন্টারে আগে থেকেই অস্ত্র মজুত রাখার তথ্য পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে গত শুক্রবার রাতে সেখানে অভিযান চালানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের কর্মীরা হামলা চালায়। হামলায় দুজন নিহত হন। ওই সময় রাজশাহী নগর ভবনে এবং ‘ডক্টর ইংলিশ’ নামের ওই প্রতিষ্ঠানে লিটন ও তার লোকজন বিপুল অস্ত্র মজুত রেখেছিলেন।
এ বিষয়ে ৪০ ইস্ট বেঙ্গল রাজশাহী সেনা ক্যাম্পের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার দরিখরবোনা কাদিরগঞ্জ এলাকায় ৪০ ইস্ট বেঙ্গলের (মেকানাইজড) একটি বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়। দীর্ঘ ১ মাসের গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে শুক্রবার রাত ১টা ৩০ মিনিট থেকে পরিচালিত এ অভিযানে অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরকের সঙ্গে জড়িত সন্দেহজনক তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
এ সময় তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি, একটি সামরিক মানের দূরবীন ও স্নাইপার স্কোপ, ৬টি দেশীয় অস্ত্র, ৫টি উন্নতমানের ওয়াকিটকি সেট, একটি সামরিক মানের জিপিএস, একটি টিজার গান, বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি কার্টিজ, বিস্ফোরক বোমা বানানোর সরঞ্জামাদি, ১১টি নাইট্রোজেন কার্টিজ।
এ ছাড়া কোচিং সেন্টারটি থেকে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি মদ, ৬টি কম্পিউটার সেট, বিপুলসংখ্যক অব্যবহৃত সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
৪০ ইস্ট বেঙ্গল রাজশাহী সেনা ক্যাম্পের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আরও তদন্ত শুরু করেছে এবং অভিযানের কার্যক্রম বর্তমানে চলমান রয়েছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গাজিউল ইসলাম জানান, অস্ত্রগুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হলে তারা বিস্তারিত জানাতে পারবেন।

