রংপুর জেলা রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্যের অভিযোগ

উপজেলা প্রতিনিধি, পীরগাছা (রংপুর)
প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৫, ১৮: ৪২
আপডেট : ৩১ মে ২০২৫, ২০: ০৯

ইউনিয়ন পর্যায়ে নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে আর্থিক লেনদেন, নকলনবিশ নিয়োগসহ বদলি বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে রংপুর জেলা রেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিন অনুসন্ধানে কয়েকজন ভুক্তভোগী এ প্রতিবেদককে জানান, অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী শাহাজাহান, মোহাম্মদ আলী বাবলু, প্রধান সহকারী স্বপন, গংগাচড়া সাব-রেজিস্ট্রার রিপন ও মহোরার মশিউর রহমানকে নিয়ে গড়ে তুলেছেন ঘুষ বাণিজ্যের ‘সিন্ডিকেট’।

আরো জানা যায়, পীরগাছা উপজেলার ইটাকুমারি ও ছাওলা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগ ও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন স্বপক্ষে দেয়ার কথা বলে একাধিক প্রার্থীর নিকট হতে প্রধান সহকারী স্বপন বাবুর মাধ্যমে ঘুষের কয়েক লাখ টাকা নেন জেলা রেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলাম।

ইটাকুমারী ইউনিয়নের আল-আমিন অভিযোগ করে বলেন, 'আমি কাজী নিয়োগ প্যানেলে মেধা তালিকায় ১ নম্বরে থাকার পরেও শুধু টাকার জন্য আমাকে বাদ দেয়া হয়েছে।'

মহামান্য হাইকোর্টের আদেশে অন্নদানগর ইউনিয়নের কাজী হানিফ মিয়াকে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দিলেও, জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের যোগসাজশে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে অবৈধভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে মামুন।

ছাওলা ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত নিকাহ রেজিস্ট্রার নুরুল হকের ছেলে আরিফুল ইসলাম বলেন, 'আমি প্রধান সহকারী স্বপন বাবুর মাধ্যমে জেলা রেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলামকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হয়েছি।'

পীরগঞ্জের নকলনবিশ রহিমা বেগমের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৩৫ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে নকলনবিশদের চাকরি জাতীয়করণের জন্য অবৈধ প্যানেল তৈরি করেছেন জেলা রেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলাম।

অপর একটি সূত্রে জানা যায়, পীরগঞ্জের অফিস সহকারী শূন্য পদে মহোরারদের পদোন্নতি দিয়ে পদ পূরণ না করে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে জেলা অফিসের অফিস সহকারী নাজনীনকে পীরগঞ্জে এবং গংগাচড়ার দিলরুবাকে রংপুর সদর অফিসে বদলি করে সিন্ডিকেট সদস্যের (মশিউর) দপ্তরে পদ শূন্য রেখে ঘুষ বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়ার প্রস্তুতি জোরালোভাবে চলছে।

গংগাচড়ার সাব-রেজিস্ট্রার রিপন চন্দ্র, মহোরার মশিউর রহমান, জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের প্রধান সহকারী স্বপন চন্দ্র, অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী শাহাজাহান ও মোহাম্মদ আলী বাবলুকে নিয়ে রংপুর জেলা রেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলাম গড়ে তুলেছেন ঘুষ এবং বদলি বাণিজ্যের সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট সদস্যদের প্রায় সকলেই অঢেল টাকার মালিক। সচেতন মহল মনে করেন, তাদের নিজেদের ও পরিবারের সদস্যদের নামে ব্যাংক হিসাব, বাড়ি, গাড়ির খোঁজ-খবর নিলে বেরিয়ে আসবে আসল রহস্য।

এ বিষয়ে কথা বলতে রংপুর জেলা রেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও না পাওয়ার পর তার অফিসে গেলে প্রতিবেদককে বলেন, 'আমি কোন সাংবাদিকের ফোন রিসিভ করি না।' অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো সঠিক নয়। আপনারা শুধু আমার অভিযোগগুলো নিয়ে টানা হেছড়া করছেন। অথচ মুজিব নগর কর্মচারীরা বর্তমানেও সাব-রেজিস্ট্রার পদে চাকরি করছে। আপনারা সেগুলো দেখেন না?' অভিযোগ রয়েছে, নিজের অপরাধ ঢাকতে সাংবাদিকের ফোন রিসিভ করেন না এই কর্মকর্তা।

এমএস

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত