খানসামায় পানি পান করতে গিয়ে চাচার লালসার শিকার শিশু

উপজেলা প্রতিনিধি, খানসামা (দিনাজপুর)
প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৫, ২১: ৩৯
আপডেট : ০৯ জুন ২০২৫, ২১: ৪৫

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ভেড়ভেড়ি ইউনিয়নের টংগুয়া (কছিরপাড়া) গ্রামে ঈদের পরদিন ৯ বছরের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী এক চাচার বিরুদ্ধে। শিশুটি বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন শিশুটির মা।

বিজ্ঞাপন

এজাহার সূত্রে জানা যায়, শিশুটির মা অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, তার মেয়ে তানিয়া (ছদ্মনাম) (৯), স্থানীয় টংগুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। ঘটনার দিন ৮ জুন (ঈদুল আজহার পরদিন) বিকাল ৪টার দিকে সে খেলার এক পর্যায়ে প্রতিবেশীর ঘরে পানি খেতে যায়। সাথে ছিলো তার চাচার মেয়ে রিমা (ছদ্মনাম)- (৮)।

পানি পান শেষে রিমা বাইরে বেরিয়ে এলেও প্রধান অভিযুক্ত নূরন্নবী ইসলাম (২১) মুখ চেপে ধরে শিশুটিকে জোরপূর্বক তার শয়নঘরে নিয়ে যায়। এরপর দরজা বন্ধ করে তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ফলে শিশুটি অজ্ঞান হয়ে পড়লে অভিযুক্ত যুবক পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে অভিযুক্তের পরিবারের সদস্যরা (তার বাবা-মা ও ভাই) অজ্ঞান শিশুটিকে বাইরে ফেলে রাখে। পরে রিমা (ছদ্মনাম) বিষয়টি শিশুটির মাকে জানালে তিনি দ্রুত সেখানে গিয়ে মেয়েকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করেন। মায়ের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় শিশুটিকে মোটরসাইকেলে করে তড়িঘড়ি নেওয়া হয় নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর শিশুটি জ্ঞান ফিরে পায়। জ্ঞান ফিরে পেয়ে সে মায়ের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেয়। এরপর শিশুটির পরিবার আইনগত ব্যবস্থার আশায় খানসামা থানায় চারজনকে আসামি করে এজাহার দায়ের করে। এজাহারে অভিযুক্তরা হলেন, নূরন্নবী ইসলাম (২১), তার ভাই জুয়েল ইসলাম (২৫), বাবা শফিকুল ইসলাম (৫৫), এবং মা লাকী বেগম (৪০)। এদের সবাই একই এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। অভিযুক্তরা শিশুটির প্রতিবেশী এবং আত্মীয়-স্বজন হওয়ায় বিষয়টি আরও বেদনাদায়ক হয়ে উঠেছে।

ভিকটিমের মা অভিযোগ করেন যে, আসামিরা আগে থেকেই তার মেয়ে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আচরণে অশোভনতা ও হয়রানি করতো। এ ঘটনায় তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত এবং কার্যকর হওয়া প্রয়োজন, যাতে অপরাধীরা শাস্তি পায় এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের নৃশংস ঘটনা পুনরায় না ঘটে। এ ধরনের অপরাধ সমাজের নৈতিক অবক্ষয় ঘটায় এবং শিশুদের নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করে, যা গ্রহণযোগ্য নয়।

শিশুটির মা বলেন,"তার মেয়ে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং তার সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে"।

তিনি আরও বলেন, “আমার মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। কীভাবে এভাবে তাকে শেষ করে দিলো! আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

এ বিষয়ে খানসামা থানার ওসি নজমুল হক বলেন, “এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। শিশুটি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মামলা প্রক্রিয়াধীন। খুব দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত