কর্মীদের সংগঠিত করে পরিষদে যাওয়ার পাঁয়তারা আ. লীগ নেতার

অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালের অক্টোবর কোদালকাটি ইউনিয়ন বিএনপির কতিপয় নেতার সহযোগিতায় পরিষদে যান ছক্কু চেয়ারম্যান। এ নিয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

আব্দুল্লাহ আল মুজাহিদ, কুড়িগ্রাম
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৫
আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২: ৫৭

কুড়িগ্রামে ছাত্র হত্যা মামলার আসামি ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভোট মেরে নেওয়ার অন্যতম নায়ক কুড়িগ্রাম জেলার চর রাজিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কোদালকাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ছক্কু আবারো পরিষদে যাওয়ার পাঁয়তারা করছে বলে জানা গেছে।

এ উপলক্ষে কোদালকাটি বাজারে কয়েকজন কর্মীকে সাথে নিয়ে শোডাউন করেছে বলে শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও আজ ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার জন্য এলাকার বিভিন্ন জায়গায় মিটিং করে তার অনুসারী ও আওয়ামী লীগের নেতা- কর্মীদের সংগঠিত করছে। ৫ আগস্ট ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দীর্ঘদিন পালিয়ে ছিলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে কোদালকাটি ইউনিয়ন বিএনপির কতিপয় নেতার সহযোগিতায় পরিষদে যান ছক্কু চেয়ারম্যান। এ নিয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়কে কেন্দ্র করে কোদালকাটি হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত বিএনপির মিটিংয়ে জবাব চাওয়া হলে নেতারা জবাব দিতে ব্যর্থ হন।

এরপর ৫ আগস্ট কুড়িগ্রামে ছাত্র অভ্যুত্থানে নিহত আশিক হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১২ নভেম্বর ২০২৪ কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বর থেকে ছক্কুকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে চর রাজিবপুর থানা পুলিশ। আশিক হত্যা মামলা ছাড়াও মাছ চুরি, জামায়াতের উপজেলা অফিস ভাঙাসহ বেশ কয়েকটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে তার নামে।

আশিক হত্যা মামলায় দেড় মাস জেল খাটার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে আত্মগোপনে চলে যায় ছক্কু।

জানা যায়, সম্প্রতি হুমায়ুন কবির ছক্কু কোদালকাটিতে এসে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ তার অনুসারীদের আবারো সংগঠিত করতে শুরু করে। প্রায় এক বছর অনুপস্থিত থাকার পর আবারো ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার পাঁয়তারা করছে চর রাজিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক। এজন্য কোদালকাটি সহ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন থেকে লোকজন ভাড়া করে আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, 'ফ্যাসিস্ট ছক্কু চেয়ারম্যান বিগত ১৭ টি বছর বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের অত্যাচার ও মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্য করেছে। কাজ না করেই প্রকল্পের টাকা মেরে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায়নি। কথা বললেই অত্যাচার চালাতো।

এ ব্যাপারে মতামত জানার জন্য ছক্কু চেয়ারম্যানের নাম্বারে কয়েকবার ফোন দিলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

হুমায়ুন কবির ছক্কু তার অনুসারী ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করে পরিষদে যাওয়ার বিষয়ে চর রাজিবপুর থানার ওসি মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি গত কয়েকদিন অফিসে ছিলাম না,আজ আসলাম। হয়তো আমার অনুপস্থিতির সুযোগে তারা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করেছে। আমি বিষয়টি দেখতেছি।

চর রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফজলে এলাহী বলেন, কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ছক্কু দীর্ঘদিন অনুপস্থিত ছিলো। তার অনুপস্থিতিতে প্যানেল চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করেছে। তাকে যেহেতু বহিষ্কার করা হয়নি তাই আইন অনুযায়ী সে আসতে পারলে আসবে। এ বিষয়ে বিভিন্ন নিয়মকানুন ও আইন সম্বলিত একটি চিঠি সে আমাকে দিয়েছে। তবে আগামীকাল পরিষদে যাবে কিনা এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত