মাগরিবের আজান হলেই চলে যায় বিদ্যুৎ, ক্ষোভে ফুঁসছে মানুষ

উপজেলা প্রতিনিধি, (চিরিরবন্দর) দিনাজপুর
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ৪৫

মাগরিবের আজান শুরুর আগ মুহূর্তে হঠাৎ করে বিদ্যুৎ চলে যাওয়া, এ যেন দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার প্রতিদিনের চিত্র।

বিগত কয়েক মাস থেকে প্রায় প্রতিদিন মুয়াজ্জিন যখন মসজিদে মাগরিবের আজানের প্রস্তুতি নিচ্ছে, ঠিক তখনই চলে যায় বিদ্যুৎ, আবার নামাজ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর চলে আসে। পুরো উপজেলা জুড়ে একই অবস্থা বিরাজ করছে ঠিক কী কারণে এমন পরিস্থিতি, জানে না এই উপজেলার মানুষ।

বিজ্ঞাপন

উপজেলা বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করা হলেও মিলছে না কোন সদুত্তর, দায়সারা উত্তর দিয়ে উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন জানায় এতে আমাদের কিছুই করার নেই মূলত দিনাজপুরের নশিপুর গেট থেকে এই লোডশেডিং দেয়া হয়।

প্রথমদিকে সাধারণ মানুষ বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিলেও এখন তেমনটা ভাবছে না, গ্রীষ্মকাল প্রচণ্ড গরমের মৌসুম, বিগত কয়েকদিন থেকে এমনিতেই দিনাজপুরে চলছে তাপদাহে সারাদিন রোদ আর গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ, সারাদিনের রোদে ও ভ্যাপসা গরমে মসজিদের ভেতরে এমনিতেই প্রচণ্ড গরম থাকে তার উপরে প্রতিদিন রুটিন করে বিদ্যুতের এই যাওয়া আসা ভালোভাবে নিচ্ছে না এলাকার মানুষজন।

বিষয়টা ইদানীং সর্বত্রই আলোচিত হচ্ছে, গ্রামে বাজারে অথবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে প্রচুর আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠলেও একবারে নিশ্চুপ ও নির্বিকার পল্লী বিদ্যুৎ অফিস।

মাগরিবের নামাজ শেষে ঘামে ভিজে ক্লান্ত মুসল্লি মসজিদের বাইরে এসে জানতে চায় এ সমস্যার সমাধান কবে হবে? অনেকেই মনে করেন পরিকল্পিতভাবে কিছু মানুষ হয়ত সরকারকে বিব্রত করতে এবং সাধারণ মানুষকে উস্কে দিতে এরকম কর্মকাণ্ড করে আসছে।

বিদ্যুৎ অফিসের সঠিক নির্দেশনা না পাওয়া মানুষের মনে ভিন্ন রকম চিন্তা হচ্ছে।

উপজেলার হাজীর মোড় বাজারের মাদ্রাসা শিক্ষক মোজাম্মেল হক জানান এটা প্রতিদিনের ঘটনা, একটা মুসলিম দেশে এরকম অসভ্যতা চলতে দেয়া যায় না।

সারাদেশে তীব্র রোদ, সেই সাথে গরম, নামাজের সময় বিদ্যুতের চলে যাওয়া কোনো স্বাভাবিক বিষয় নয়।

উপজেলার ঘুঘুরাতলী মসজিদের মুসল্লী সাইদুল ইসলাম জানান, নামাজের সময়ে কেন বিদ্যুতের এ অবস্থা সেটা পরিষ্কার করা দরকার, নয়তো মানুষ ভুল বুঝবে এবং নামাজের পর পরে বিদ্যুৎ চলে আসা এটা স্বাভাবিক লক্ষণ নয়, হয়ত সরকারকে বিব্রত করতেই কেউ এমনটা করছে।

বিষয়টি প্রথমের দিকে এলাকার মানুষজন স্বাভাবিকভাবে নিলেও ধীরে ধীরে ক্ষোভে পরিণত হচ্ছে।

এভাবে চলতে থাকলে মানুষ পল্লী বিদ্যুৎ ও সরকারের প্রতি আস্থা হারাবে মুসল্লিরা রাস্তায় নেমে আসবে, কর্তৃপক্ষের উচিত হবে প্রকৃত সমস্যা কোথায় তা জনগণকে জানানো।

দিনাজপুর পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি -১ চিরিরবন্দর সাব জোনাল অফিসের ডিজিএম মোহাম্মদ উদ্দিন সেখ জানান, মূলত সাদিপুর ৩৩ হাজার বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রে অটো সেন্সর ব্যবহার করার কারণে সপ্তাহে ৫/৬ দিন একই সময়ে বিদ্যুৎ চলে যায়, তবে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি অটো সেন্সর বন্ধ করে রিলে সিস্টেম চালু করতে, এটা চালু হলে একই সময় পুরো উপজেলায় লোড শেডিং হবে না, চিরিরবন্দরে বর্তমানে ৯টি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়, রিলে সিস্টেম চালু করলে ৯ ফিডারের জায়গায় ৩ অথবা ৪টা বন্ধ করলে দুর্ভোগ কমানো সম্ভব হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত