এইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে তিন পরীক্ষার খরচ ৫ লাখ টাকা!

কামরুল হাসান, হবিগঞ্জ
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬: ৫৩
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৭: ৩৭

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) সার্টিফিকেট পরীক্ষা-২০২৪ এর কেন্দ্র ফি লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোনো ধরনের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে মাত্র তিনটি পরীক্ষার বিপরীতে খরচ দেখানো হয়েছে ৫ লাখ টাকা। যা ২০২৩ সালের ১৭টি পরীক্ষার ব্যয়ের চেয়েও বেশি।

বিজ্ঞাপন

মূলত প্রশাসনিক কর্মকর্তা পরিচালনা কমিটির সদস্য ও কর্মচারীদের সম্মানি বাবদ উত্তোলন করা হয়েছে প্রয়োজনের তুলানায় অতিরিক্ত টাকা। যা অনিয়ম হয়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষা বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রকও।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৪ এ শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, পঞ্চাশ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও জহুর চান বিবি মহিলা কলেজ থেকে মোট ১১৩৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত কেন্দ্র ফি, কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা ফি ও ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি বাবদ আয় হয় ৫ লাখ ৮২ হাজার ১০৬ টাকা। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের কারণে মাত্র ৩টি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি বাদে বাকি ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৪০৬ টাকা খরচ দেখিয়ে বিল উত্তোলন করেন পরীক্ষা পরিচালনা কমিটি। যেখানে সম্মানী বাবদ ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৬০৫ টাকা, ডাক খরচ ২২৩৬ টাকা এবং ৪৩টি ভাউচারে ১ লাখ ২ হাজার ৫৬৫ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। হিসেব করলে দেখা যায় প্রতি ১টি পরীক্ষার বিপরীতে খরচ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা।

অপরদিকে ২০২৩ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ওই বছর কেন্দ্র কি বাবদ আয় হয় ৫ লাখ ৭২ হাজার ১১৫ টাকা। ব্যবহারিক ও ১৭ টি পরীক্ষার বিপরীতে সমস্ত টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এরমাঝে প্রশাসনিক কর্মকর্তা শিক্ষক-কর্মচারী সম্মানী বাবদ ৩ লাখ ৫৭২ টাকা খরচ করা হয়। ২০২৪ সালের পরীক্ষায় সম্মানী বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৬০৫ টাকা। যা ২০২৩ সালের চেয়ে ৯৩ হাজার ৩৩ টাকা বেশি।

অতিরিক্ত খরচের বিষয়ে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার কেন্দ্র ফি থেকে তৎকালীন অধ্যক্ষ ও পরীক্ষার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিজুল হক চৌধুরী ১৭ পরীক্ষার বিপরীতে সম্মানী নেন ৩০ হাজার ৯৩৮ টাকা। কমিটির পরিচালনা কমিটির ৫ সদস্য নেন ১ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকা।

এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও পরীক্ষার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, এবছর আয় বেশি হওয়ায় সম্মানী বেশি নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষায় খাতের বাইরে থেকে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি।

একই বিষয়ে সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হাবিবা বাছিতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার কাছে অনিয়ম মনে হয়েছে। আমরা আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। কেউ যদি অভিযোগ করেন তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার পল্লব হোম দাস বলেন, অধ্যক্ষের সঙ্গে আমি কথা বলেছি তিনি জানিয়েছেন ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত বছরের তুলনায় এবছর সম্মানী বেশি উত্তোলন করা হয়েছে। এখানে যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থাগ্রহণ করব।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত