হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা সীমান্তে নিহত জহুর আলির লাশ বাংলাদেশি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় পুলিশ। তবে বাংলাদেশি পুলিশ জহুর আলির ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে তার লাশ দাফনের জন্য ফেরত দেয়। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জহুর আলির লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলে রাত ৮টার দিকেই তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এদিকে জহুর আলির শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। খোয়াই পুলিশ জানিয়েছে, জহুর আলি হৃদরোগে মারা গেছেন। এছাড়া তিনি ফুসফুসে ইনফেকশন এবং নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে এ আঘাত অসুস্থতাজনিত কারণে ছোটাছুটি করতে গিয়ে হতে পারে বলে মন্তব্য করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
বিএসএফের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানান স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, ভারতের খোয়াই হাসপাতালের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদন এ তথ্য জানা গেছে। এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট তারা ফেরত লাশের সাথে দিয়েছে। তবে ফাইনাল প্রতিবেদন আসলেই তার মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য জানা যাবে বলে পুলিশ জানায়।
এদিকে সীমান্তে জহুর আলি নিহতের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা বলছে, জহুর আলি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে তিনি কিভাবে ভারতে গেলেন? তা তদন্ত হওয়া দরকার। কারা কারা সেদিন তার সাথে ছিল তাদের খুঁজে বের করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই মৃত্যু রহস্য বের হতে পারে। স্থানীয়রা এ ঘটনার দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
চুনারুঘাট থানা পুলিশ এ বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন ওসি তদন্ত শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধায় বাল্লা সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে লাশ রিসিভ করে আনার সময় খোয়াই পুলিশ আমাদের জানিয়েছে, জহুর আলি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এছাড়া তিনি ফুসফুসে ইনফেকশন এবং নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ঢুলনা গ্রামের মুনছুব আলীর ছেলে জহুর আলি (৫৫)। গত শনিবার বিকেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন তিনি। পরদিন রোববার দুপুরে খবর আসে ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই মহকুমার গৌড়নগর এলাকায় জহুর আলির লাশ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার ত্রিপুরায় ময়নাতদন্ত শেষে বিএসএফ ও পুলিশ বাংলাদেশি পুলিশের কাছে জহুর আলির লাশ হস্তান্তর করে।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়াই লাশ দাফনের জন্য পরিবারের কাছে কেন দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম বলেন, ভারত পুলিশ ময়নাতদন্ত করেছে। ভারতীয় ময়নাতদন্ত বাংলাদেশ পুলিশ মেনে নিয়েছে কি-না এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওরাই ময়নাতদন্ত করেছে, আমরা লাশ বুঝে নিয়েছি।
এদিকে নিহতের ছেলে অলি মিয়া তার বাবার হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করেন।

