বিএনপির এক ডজন, জামায়াতের একক প্রার্থী

হাওর জনপদে নির্বাচনের ঢেউ

বাবরুল হাসান বাবলু, তাহিরপুরসাজেদুল হক রনি, ধর্মপাশাআব্দুল্লাহ আল মামুন, জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ)আতাউর রহমান, মধ্যনগর
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩: ১২
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩: ১৪

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জ-১ আসনেও রাজনৈতিক মাঠ সরব হয়ে উঠেছে। বিএনপির কমপক্ষে সাতজন মনোনয়নপ্রত্যাশী ও জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী ইতোমধ্যে মাঠে তৎপরতা চালাচ্ছেন। তারা দলীয় রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন। পাশাপাশি সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শরিক হচ্ছেন। কেউ কেউ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নানাভাবে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। ব্যানার-ফেস্টুন, কর্মিসভা ও গণসংযোগের মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের অবস্থান তুলে ধরছেন ভোটার ও সাধারণ মানুষের কাছে।

বিজ্ঞাপন

তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত সুনামগঞ্জ-১ আসনটি জেলার বৃহৎ ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় এলাকা। আয়তন, ভোটার সংখ্যা, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং পর্যটন সম্ভাবনার কারণে এ আসনটি কেন্দ্রীয় রাজনীতিতেও বেশ গুরুত্ব বহন করে। বিখ্যাত টাঙ্গুয়ার হাওরসহ প্রকৃতির অনন্য সৌন্দর্যবেষ্টিত এ জনপদ রাজনৈতিকভাবে সব সময় আলোচনায় থেকেছে।

এ আসনে বিএনপির সাতজন মনোনয়নপ্রত্যাশী মাঠে গণসংযোগ করছেন। এদের মধ্যে তাহিরপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল, কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহসাধারণ সম্পাদক আনিসুল হক, ধর্মপাশা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালিব খান, সাবেক এমপি নজির হোসেনের স্ত্রী সালমা নজির, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন, যুবদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) মো. মাহবুবুর রহমান এবং ব্যারিস্টার হামিদুল হক আফিন্দী লিটনও রয়েছে।

সালমা নজির বর্তমানে তাহিরপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী নজির হোসেন এই আসনে দীর্ঘদিন মানুষের প্রতিনিধি ছিলেন। তার মৃত্যুর পর আমি প্রতিটি ঘরে গিয়ে মানুষের দুঃখ-কষ্টের কথা শুনেছি। যদি বিএনপি আমাকে মনোনয়ন দেয়, তবে স্বামীর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করাই হবে আমার অঙ্গীকার।’

কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিসুল হক বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামীবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। তিনি বলেন, দলের দুঃসময়ে কখনোই মাঠ ছেড়ে পালাইনি। ভবিষ্যতেও দল যেমন চাইবে, তেমনিভাবেই কাজ করে যাব।’

অন্যদিকে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, ‘আমি দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে সবসময় সম্মুখ সারিতেই ছিলাম। দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বহুবার মামলা-হামলার শিকার হয়েছি, জেলও খেটেছি। এগুলো বিবেচনা করে দল আমাকে মূল্যায়ন করবে বলে আমার বিশ্বাস’।

ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মোতালিব খান এ আসনের প্রবীণ রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন। তিনি বলেন, ‘দলের জন্য আমি একাধিকবার কারাভোগ করেছি। আমি বিশ্বাস করি, দলের প্রতি এই ত্যাগ ও নিষ্ঠার যথাযথ মূল্যায়ন পাব’।

এই আসনে তরুণ মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘গত দেড় দশকের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে তরুণদের ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। তারা সাহসিকতা ও দৃঢ়তা নিয়ে রাজপথে সক্রিয় ছিল। আমি আশা করি, আসন্ন নির্বাচনে দল এই তরুণদের অবদানকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করবে। এছাড়া যুবদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) মো. মাহবুবুর রহমান এবং যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার হামিদুল হক আফিন্দী লিটনের নামও আলোচনায় রয়েছে।

অপরদিকে, অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী যিনি ২০০৮ সালে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেনের কাছে হেরে যান। ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে তিনি বিকল্পধারায় যোগ দিয়ে সেখান থেকে মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিলেন। সম্প্রতি ধর্মপাশায় তার নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে পুনরায় বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন বলে ঘোষণা দেন তিনি। তার এই কথায় বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

জামায়াতে ইসলামী সুনামগঞ্জ-১ আসনে একক প্রার্থী সুনামগঞ্জ জেলা আমির মাওলানা তোফায়েল আহমদ খান নির্বাচনি আসন চষে বেড়াচ্ছেন। সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে জোরালো প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি।

সুনামগঞ্জ-১ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মাওলানা তোফায়েল আহমদ খান বলেন, ‘জনগণের ভালোবাসা ও দলের আস্থায় আমি মনোনীত হয়েছি। আমি মানুষের দুঃখ-কষ্ট শুনে তাদের পাশে থাকতে চাই। উন্নয়ন, ন্যায্যতা ও ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠাই আমার লক্ষ্য। জনগণের দোয়া ও সমর্থনে একটি আদর্শ ও কল্যাণময় সমাজ গঠনই আমার প্রতিশ্রুতি।’

এ আসনে এবি পার্টি, এনসিপি ও অন্যান্য ইসলামী রাজনৈতিক দলের কাউকে এখনো মাঠে দেখা যায়নি।

অসদাচারণের দায়ে টঙ্গী পাইলট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

গুম-খুনে জড়িত ১৫ সেনা কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত। ট্রাইব্যুনালে হাজির। সাবজেলে প্রেরণ

এবার ১ টাকায় গরুর মাংস বিতরণের ঘোষণা সেই এমপি প্রার্থীর

অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বহন করা সেই প্রিজন ভ্যানে কী আছে

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত