মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ক্লিবডন চা বাগানের শ্রমিক সর্দার হত্যায় প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ভোরে উপজেলার কামিনীগঞ্জ বাজার থেকে তাবে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় জব্দ করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত কোদালের হাতল (লাঠি), ভিকটিমের মোবাইল ফোন, জুতা, লাঠি বাঁধার গামছার টুকরা এবং ব্যবহৃত মোটরসাইকেল।
জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) মো. আজমল হোসেন। এ সময় জুড়ী থানার ওসি মো. মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফরহাদ মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রামবচন গোয়ালা (৪০) বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে পরদিন কুলাউড়া থানায় জিডি করেন স্বজনরা। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর সকালে জুড়ীর কাপনাপাহাড় চা-বাগান এলাকায় রক্তের দাগ ও স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে বাবুনালা ছড়া থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার পর পুলিশ সুপার এম.কে.এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেন (পিপিএম) এর নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা এবং কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজমল হোসেনের তত্ত্বাবধানে ওসি মো. মুরশেদুল আলম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে বিশেষ টিম তদন্ত শুরু করে। শুক্রবার ভোরে অভিযুক্ত গোলাপ সতনামী (৩৩)কে আলামতসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে গোলাপ জানায়, ২০১৭ সালে রামবচনের কারণে সে চাকরি হারিয়েছিল। দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকেই হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সে রামবচনকে মদপানের প্রস্তাব দিয়ে মোটরসাইকেলে রত্না চা বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে চন্দন নামের আরেক ব্যক্তিসহ তারা মদ পান করে। কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে গোলাপ ক্ষিপ্ত হয়ে ফেরার পথে বাবুনালা ছড়ার কাছে মোটরসাইকেল থামিয়ে কোদালের হাতল দিয়ে রামবচনের মাথায় একাধিক আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এরপর গোলাপ সোনারূপা চা বাগানে গিয়ে এক ব্যক্তিকে বিষয়টি জানায়। পরে দুজনে মিলে লাশ টেনে বাবুনালা ছড়ায় ফেলে গাছপালা ও মাটি চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ওমর ফারুক জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে জুড়ী থানায় মামলা করেছে। আসামিকে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

