নবীগঞ্জে একটি সড়ক নিয়ে ফুঁসে উঠেছেন ৫০ গ্রামের মানুষ

উপজেলা প্রতিনিধি, নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ)
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ১২

একটি সড়কের কারণে দুই লাখ মানুষের ভোগান্তি। বারবার জানানোর পরও নেই সংস্কারের উদ্যোগ। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় জনপ্রশাসনের প্রতি ক্ষোভে ফুঁসছেন ৫০টি গ্রামের বাসিন্দারা। উপজেলার কাজীর বাজার থেকে বানিয়াচং উপজেলার মার্কুলি পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার ওই সড়কে প্রতিদিন চলাচল করে লক্ষাধিক মানুষ। স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহন থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যাতায়াত, সব ক্ষেত্রেই ব্যবহার হয় এই সড়কটি।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়রা বলছেন, ১২ বছর ধরে ভাঙা সড়কের ভোগান্তি আর সংস্কারের আবেদন করে কোনও সাড়া না পেয়ে চলাচলকারীরা এখন চরম ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, এত উন্নয়নের জোয়ার। সব উন্নয়ন মার্কুলির সড়কে এসে মুখ থুবড়ে পড়েছে। এখানকার ৫০টি গ্রামের মানুষের সমস্যার কথা পৌঁছায় না জনপ্রশাসনের কানে।

এদিকে, গত সপ্তাহে জনগুরুত্বপূর্ণ ওই সড়ক সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন স্থানীয়রা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ১০ হাজার গ্রামবাসীসহ শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে বক্তারা দ্রুত সড়ক সংস্কার না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন। রিংকু কুমার দাশ ও আলমগীর হোসেন আরিফের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গ।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, শিগগির সড়কটি মেরামত করা না হলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ এবং ইউএনও ও এলজিইডি অফিস ঘেরাও করবে এলাকাবাসী।

জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার বড় ভাকৈর ইউনিয়নে কাজীর বাজার থেকে বানিয়াচং উপজেলার মার্কুলি পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন ৫০ গ্রামের অন্তত দুই লাখ মানুষ চলাচল করেন। বেহাল এই সড়কে সামান্য বৃষ্টি হলেই আর চলাচল করা যায় না। এতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে স্থানীয়দের। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও বয়স্ক ব্যক্তিরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সময়মতো স্কুল কিংবা অফিসে না যেতে পারার অভিযোগও করছেন কেউ কেউ। রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বাদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন স্থানীয়রা।

অ্যাম্বুলেন্স চালকরাও এ সড়কে রোগী বহন করতে রাজি হন না। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের পাঁচটি উপজেলা নবীগঞ্জ, বানিয়াচং, দিরাই, শাল্লা ও আজমিরীগঞ্জের অন্তত ৫০ গ্রামের মানুষ যাতায়াতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সড়ক সংস্কারের ব্যাপারে তারা জেলা প্রশাসকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তদবির করেছেন। ইউএনও, জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে বহুবার আবেদন করা হয়েছে। কোনো লাভ হয়নি। এ কারণে ২৬ কিলোমিটার এই সড়ক নিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভের শেষ নেই। কাজীর বাজার-মার্কুলির সড়কটি পাড়ি দিতে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা লাগার কথা। অথচ সময় লাগে তিন ঘণ্টা।

নবীগঞ্জের ইউএনও মো. রুহুল আমীন বলেন, সড়কটির কথা শুনেছি। রাস্তাটি নিয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা হয়েছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত