হবিগঞ্জের সদর উপজেলা ও লাখাই উপজেলার কানাই নদীর পূর্ব পাড় ঘেঁষে প্রায় দুই একর জায়গাজুড়ে শতবছর ধরে ডুমড়া গ্রামের হাওরের বুকে দাঁড়িয়ে আছে বিশালাকৃতির একটি বটগাছ। রোদ, বৃষ্টি ও ঝড়ে শতবছর ধরে পথিক, কৃষক, রাখাল ও জেলেদের শীতল আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে গাছটি। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় গাছটি ঘিরে অনেক সময় পূজা-অর্চনাও করে থাকে।
গাছটির ঝুলন্ত লতা আর শেকড় নেমে শত শত গাছের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে আবার মানত বা মনের আশা পূরণের জন্যও গাছটিকে বেছে নেন। ফাল্গুন মাসে পাগল শঙ্কর মহাউৎসব পালন করা হয়ে থাকে এখানে। মুসলিমরা গাছটিকে উপকারী বৃক্ষ হিসেবে সমীহ করে থাকেন।
বটগাছটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাখির কলকাকলিতে মুখরিত শীতল পরিবেশ চিত্তকে বিস্ময় ও আনন্দে অভিভূত করে। গাছটি শতবছরের স্মৃতি। পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে গাছটির বিশাল শাখা-প্রশাখা। শিকড়-বাকড়ে ছেয়ে গেছে বিস্তৃত আবাদি জমি। গাছটি চিরসবুজ। বার্ধক্যের ছাপ একটুও পড়েনি তার গায়ে।
ডুমড়া গ্রামটি বহু আগে থেকেই কুমার সম্প্রদায়ের বসতির জন্য বিখ্যাত ছিল। তাছাড়া কিছু জমিদার শাসন করতেন ওই এলাকাটি। অনেক পুরাতন দালানকোঠাও কবছর আগে দেখা যেত। এখন আর সেসব দালানকোঠা নেই। ওই গ্রামে এখন মূলত মুসলিমদের বাস। অনেকেই কৃষিকাজ করে ক্লান্ত হয়ে বটগাছটির ছায়ায় বিশ্রাম নেন, নদীপার হতে এলে গাছের নিচে অপেক্ষা করেন।
বটগাছটি বহু যুগের নীরব সাক্ষী হয়ে আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এর প্রতিটি শাখা-প্রশাখা যেন অতীতের গল্প বহন করে। স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা সুন্দর সরকার বলেন, পুরাতন বটবৃক্ষটিকে বাঁচিয়ে রাখা ও তার সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

