৯৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ

নাবিল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এস আলমসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৫, ২২: ০৫

জাল রেকর্ডপত্র তৈরি করে প্রতারণা, জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের ৯৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধে নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধার আমিনুল ইসলাম ও এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল ইসলামসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

দুদক জানিয়েছে, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কোনোরূপ পণ্য ক্রয়-বিক্রয় না করে মোট ৯৫০ কোটি টাকার ভুয়া ডিল-সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র তৈরি করে আসামিরা তা ব্যবহার করে ব্যাংক কর্মকর্তাদের অপরাধমূলক অসদাচরণসহ নানাবিধ ব্যাংকিং অনিয়ম এবং দুর্নীতির মাধ্যমে গ্রাহক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বাই-মুরাবাহা টিআর বিনিয়োগ প্রস্তাবনা, সুপারিশ, অনুমোদন, বিতরণ ও উত্তোলন করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ৯৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।

বিজ্ঞাপন

বুধবার বেলা ৩টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য জানান। তিনি জানান, এস আলম ও নাবিল গ্রুপ-সংশ্লিষ্টদের সাপ্লায়ার এবং বেনিফিশিয়ারি হিসেবে দেখিয়ে ভুয়া ঋণপত্র তৈরি করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির (১৮৬০) ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা, তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) এবং ৪(৪) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদক জানায়, মামলায় এস আলমের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মাসুদের স্ত্রী ফারজানা ও ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া এস আলম, ইসলামী ব্যাংক ও নাবিল গ্রুপের শীর্ষ কর্মকর্তাদেরও আসামি করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, মামলায় নাবিল গ্রুপের আসামিরা হলেন নাবিল গ্রুপের চেয়ারম্যানের আত্মীয় ও মার্কেট মাস্টার অ্যানালাইজারের চেয়ারম্যান মো. শরিফুল ইসলাম, এমডি মো. শাহ আলম, নাবিল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান শিমুল এন্টারপ্রাইজের মালিক আমিনুল ইসলাম ও নাবিল ট্রেডিংয়ের মালিক ইসরাত জাহান।

সূত্র জানায়, ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মুনিরুল মওলাসহ প্রতিষ্ঠানটির আরো যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা হলেন ব্যাংকটির ইভিপি মোজাহিদুল ইসলাম, এভিপি মোহাম্মদ কাইয়ুম শিকদার, মো. কামরুজ্জামান, মো. জহিরুল হক, এফএভিপি মো. আব্দুল কাইয়ুম, মো. আলমগীর হোসেন, ডিএমডি মাহমুদুর রহমান, সাবেক এসভিপি মো. নাজমুল হুদা সিরাজী, ভিপি মো. মমতাজউদ্দিন চৌধুরী, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মিফতাহ উদ্দিন, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ কায়সার আলী, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিদ্দিকুর রহমান, এসইভিপি মোহাম্মদ শাব্বির ও মোহাম্মদ উল্লাহ।

সূত্র জানায়, এ ছাড়াও জড়িত রয়েছেন তৎকালীন নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ড. মো. সেলিম উদ্দিন, সৈয়দ আবু আসাদ (প্রতিনিধি, এক্সিলেসর ইমপেক্স কোম্পানি লি.), ড. তানভীর আহম্মদ (প্রতিনিধি, প্যারাডাইস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড), মো. কামরুল হাসান (প্রতিনিধি, গ্র্যান্ড বিজনেস লিমিটেড), প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সালেহ জহর (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসাপ্রশাসন অনুষদের শিক্ষক), প্রফেসর ড. মো. ফসিউল আলম ও জেকিউএম হাবিবুল্লাহ।

দুদক জানায়, এস আলমের যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা হলেন এস আলম ভেজিটেবল ওয়েলের এমডি মো. শহিদুল ইসলাম, মিশকাত আহমেদ, আলম সুপার এডিবল ওয়েলের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদের স্ত্রী শাহানা ফেরদৌস ও এস আলমের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মাসুদের স্ত্রী ফারজানা পারভীন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত