Ad T1

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতি

দেশের শেয়ারবাজারে বড় পতন, সূচক কমলো ১৫০ পয়েন্ট

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৫, ১৮: ১৪

শেয়ারবাজারে চলমান মন্দার মধ্যেই বড় ধরনের দরপতন হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। বুধবার একদিনেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের পতন হয়েছে প্রায় ১৫০ পয়েন্টের। শতকরা হিসাবে পতনের হার ৩ শতাংশেরও বেশি।

বড় ধরনের দরপতনে দিনশেষে ডিএসইএক্স নেমে এসেছে ৪ হাজার ৮০০ পয়েন্টে। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৯৬ শতাংশেরও বেশি কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধের প্রভাবে বাজারে বড় ধরনের পতন হয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, আজ লেনদেনের শুরুতেই বিক্রি চাপে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের পতন ঘটে। ফলে লেনদেন শুরুর প্রথম আধ ঘণ্টার মধ্যেই ডিএসইএক্স সূচকের পতন ঘটে প্রায় ১০০ পয়েন্টের মতো। এরপর সূচকের কিছুটা উল্লম্ফন হলেও লেনদেনের শেষ সোয়া ঘণ্টায় আবারও টানা পতন ঘটে।

ফলে দিনশেষে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচকসহ সবকটি সূচকের বড় পতন ঘটে। এরমধ্যে শতাংশ হিসাবে সবচেয়ে বেশি পতন হয়েছে শরিয়াহ সূচকের। ৩ দশমিক ৮৪ শতাংশের পতন দিয়ে দিনশেষে এ সূচক দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৭ পয়েন্টে। অপরদিকে ডিএসই-৩০ সূচকের পতন হয়েছে ৪০ পয়েন্টের, যা শতকরা হিসাবে ২ দশমিক ১৯ শতাংশ।

বাজারের পতনের কারণ হিসাবে প্রাইম অ্যাসেট ম্যানেজম্যান্ট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী মঈন আল কাশেম আমার দেশকে বলেন, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রভাবে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হতে পারে। আমাদের দুটি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় এক ধরনের উত্তেজনার পাশাপাশি অনিশ্চয়তাও তৈরি হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়তে পারে এমন আশংকায় শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের পতন ঘটেছে।

এর আগে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলেও দেশের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতন হয়েছিল বলেও জানান এ বিশ্লেষক। চলমান মন্দার মধ্যে বড় ধরনের পতনের কারণে শেয়ারবাজার পরিস্থিতি আরও নাজুক অবস্থার মধ্যে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের একজন নির্বাহী পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে আমার দেশকে বলেন, বাজারে লেনদেনের পরিমাণ খুব বেশি হচ্ছে না। বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট অনিশ্চয়তায় বিক্রি চাপ তৈরি হলেও ক্রেতা কম থাকার কারণে বাজারে বড় ধরনের পতন হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যেসব কোম্পানির সূচক পতনে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে সেসব কোম্পানির শেয়ারের দরের পতন ঘটে। যদিও সেসব কোম্পানির শেয়ারের লেনদেনের পরিমাণ খুব বেশি নয়। তবে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধকে কারণ হিসাবে দেখিয়ে মহল বিশেষ বাজারকে অস্থিতিশীল করছে কি না, এনিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন কেউ।

এদিকে ধারাবাহিক দরপতনের সঙ্গে আজকের বড় ধরনের পতনের ফলে ডিএসইএক্স সাড়ে ৪ বছরের বেশি সময়ের পর সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছে। আজ লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স নেমে এসেছে ৪৮০২ পয়েন্টে। এর আগে সূচকটির সর্বনিম্ন অবস্থান ছিল ২০২০ সালের ২৫ আগষ্ট। ওই সময়ে সূচক ছিল ৪ হাজার ৭৮১ পয়েন্টে।

এদিকে সূচকের পতনের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। মঙ্গলবারের তুলনায় ৩৩ কোটি টাকা কমে লেনদেন হয়েছে ৫১৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

আজ লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৯টি ইস্যুর মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ৯টির। দর কমেছে ৩৮৫টি ইস্যুর। এ হিসাবে ৯৬ শতাংশ ইস্যুর দর কমেছে। আর দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫টির দর।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরসহ কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। জবাবে পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তান। এতে চির বৈরী ও পারমাণবিক শক্তিধর দুটি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বড় ধরনের যুদ্ধ লেগে যাওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত