কৃষকের পণ্য সরাসরি অনলাইনে বিক্রির পরামর্শ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮: ৩৮

মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতির আওতায় চাহিদা নিয়ন্ত্রণের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। তবে এর মধ্যেও সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় কিছু ত্রুটি রয়েছে বলে মনে করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সফল অনলাইন ব্যবসায়ীদের অনুকরণে কৃষকের পণ্য সরাসরি অনলাইনে বিক্রির পরামর্শ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞাপন

গতকাল রোববার অর্থ বিভাগের আয়োজনে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি: সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধে এসব পরামর্শ দেওয়া হয়।

মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত পণ্য সরাসরি ভোক্তার কাছে পৌঁছে দেয়ার কার্যকর পদ্ধতি দ্রুত খুঁজে বের করা প্রয়োজন বলে মনে করে অর্থ বিভাগ। এক্ষেত্রে অনলাইনভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা অন্যান্য উপায়ে যে সকল ব্যবসা সফলভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা অনুসরণে চাষীদের জন্যও একটি ব্যবসা মডেল তৈরি করার বিষয়টি বিবেচনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

প্রবন্ধে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের অধিকতর করণীয় বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়। বিশেষ করে,কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রকৃত চাষীদের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা।

অন্য পরামর্শগুলোর মধ্যে রয়েছে, চাল, ডাল, তেল, আলু ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের বার্ষিক চাহিদার সাথে বর্তমান মজুদের তুলনাভিত্তিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে মধ্যমেয়াদি চাহিদার প্রক্ষেপণ এবং এ সব পণ্য সরবরাহের রূপরেখা তৈরি করা। চাল, আলু, পেঁয়াজসহ কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে উৎপাদন পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সাময়িক ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক শুল্ক হ্রাস বা অব্যাহতির বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া। খাদ্যদ্রব্যের পাশাপাশি সার ও কৃষি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপকরণ সরবরাহের রূপরেখাও তৈরি করা।

কৃষকের সুবিধার্থে হিমাগার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে অর্থবিভাগ বলছে, কৃষি ও খাদ্যদ্রব্য মজুদ/সংরক্ষণের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গুদাম/হিমাগারের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে গৃহীত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে এতে বলা হয়, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি এবং সহায়ক রাজস্বনীতি গ্রহণ করা হয়েছে। নীতি সুদের হার জুলাই মাসে ছিল ৮ শতাংশ। ধাপে ধাপে তা বৃদ্ধি করে ডিসেম্বর মাসে ১০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে এবং এর ফলে নীতি সুদহারের করিডরের ঊর্ধ্বসীমা ১১.৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সব ধরনের প্রকার টাকা ছাপানো বন্ধ রাখা হয়েছে।

প্রকল্পগুলোতে অর্থায়ন কমিয়ে আনার কথাও জানানো হয় এতে। অর্থ বিভাগ বলছে, কম গুরুত্বপূর্ণ এবং অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন প্রকল্প বাতিলসহ সরকারি খরচ হ্রাসে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

তাছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে, চাল, আলু, পেঁয়াজ, ভোজ্য তেল ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উপর শুল্ক অব্যাহতি/হ্রাস করা হয়েছে। ঢাকা এবং চট্টগ্রামের জেলা শহরে ওএমএস-এর মাধ্যমে ডিসেম্বর মাসে সুলভে সবজি বিক্রয় করা হয়েছে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অন্য পদক্ষেপের কথা জানিয়ে বলা হয়, দেশের ১ কোটি পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে সুলভ মূল্যে পণ্য সরবরাহের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ট্রাকের মাধ্যমে বিভাগীয় শহরগুলোতে তেল, চিনি, ডাল এবং রমজান উপলক্ষ্যে খেজুর এবং ছোলা সুলভ মূল্যে সরবরাহ করা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাজার মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করেছে। এ লক্ষ্যে প্রতিটি জেলায় ১০ সদস্য বিশিষ্ট টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।

তবে এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের উপরে রয়েছে বলে মনে করে অর্থ বিভাগ।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত