টানা ছয় মাস দাম বৃদ্ধির হার কমল নির্মাণসামগ্রীর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৩: ১৩

উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের মানুষের কেনাকাটা কমে গেছে। বড় ধরনের খরচে নজর নেই সাধারণ নাগরিকদের। ফলে দেশের ভবন নির্মাণে পিছুটান দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। তা ছাড়া ড্যাপ সংশোধন না হওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে এ খাতের কর্মযজ্ঞ।

সেপ্টেম্বরে দেশের ভবন নির্মাণসামগ্রীর দাম কমেছে ৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। কাজ না থাকায় এ খাতের শ্রমিকদের মজুরিও কমেছে গত মাসে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস প্রাইস ইনডেক্সে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি উন্নয়ন কাজ থমকে থাকায় বিভিন্ন প্রকল্পের ঠিকাদাররা অলস সময় পার করছেন। কিছু ঠিকাদাররা পালিয়ে যাওয়ার কারণেও এ প্রভাবটি পড়েছে নির্মাণ খাতে। আরেকটি বড় কারণ হলো, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ড্যাপ (ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান) অনুমোদন না দেওয়ায় নতুন কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে না নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলো।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা সম্প্রতি জানিয়েছেন, বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় দুই শতাধিক ঠিকাদার পালিয়েছেন। ফলে উন্নয়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম (এডিপি) মাত্র ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে।

বিবিএসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরে নির্মাণসামগ্রীর গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। গত এপ্রিলে এ খাতের মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। এপ্রিলের পর প্রতি মাসেই এ খাতের মূল্যস্ফীতি কমেছে। সেপ্টেম্বরে শুধু ভবন নির্মাণের বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ার হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গত এপ্রিলেও তা ছিল ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। অর্থাৎ এ খাতের বিভিন্ন সামগ্রীর চাহিদা ক্রমান্বয়ে কমছে। ফলে দাম বৃদ্ধির হারও কমেছে।

এ খাতের অন্যতম ব্যয় পরিবহন খাতে। গত ছয় মাসে নির্মাণ খাতের পণ্য পরিবহনের খরচ বাড়ার হারও কমে প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। এখাতের পণ্য পরিবহন খরচ গত মাসে বেড়েছে মাত্র ৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ, এপ্রিলেও এ হার ছিল ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ।

নির্মাণ খাতের শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির হারও কমেছে সেপ্টেম্বরে। সেপ্টেম্বরে এ খাতের মজুরি বৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এটিও গত ছয় মাসে টানা কমেছে। গত এপ্রিলে এ খাতের শ্রম মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

নির্মাণসামগ্রীর কেনাকাটা কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে রিহ্যাবের পরিচালক ড. হারুন অর রশিদ আমার দেশকে বলেন, মূল কারণ দুটি। এখন পর্যন্ত রাজউকের বিধিমালার কোনো গ্যাজেট হয়নি। ড্যাপ সংশোধন হয়নি। ফলে পুরো ঢাকা শহরে এখন পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনা অনুমোদন হচ্ছে না। ফলে কোনো কাজও হচ্ছে না।

দ্বিতীয় কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের এ সময় মানুষের কেনাকাটা কমে গেছে। ফলে মানুষ বড় ধরনের খরচের সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। আবার ড্যাপ অনুমোদন না হওয়ায় কাজও কম। ফলে নির্মাণসামগ্রীর কেনাকাটাও কম।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত