পুঁজিবাজার সংস্কার: জুনের মধ্যেই চূড়ান্ত হচ্ছে টাস্কফোর্সের প্রস্তাব

কাওসার আলম
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৫, ১২: ৫২

পুঁজিবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্স চলতি জুন মাসেই তাদের সব সুপারিশ চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সংস্কার কমিটি কার্যপরিধির আলোকে তিনটি বিধিমালার চূড়ান্ত খসড়া পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে জমা দিয়েছে। আরো তিনটি বিধিমালার খসড়া চূড়ান্তকরণে কাজ করছে টাস্কফোর্স। বিধিমালা তিনটি হলোÑকরপোরেট গর্ভন্যান্স, মানবসম্পদ ও আইটি বিধিমালা। আইনগত বিষয় জড়িত থাকার কারণে তিনটি কর্মপরিধির বিষয়ে টাস্কফোর্স প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে।

বিজ্ঞাপন

মোট ১৭টি কর্মপরিধি নির্ধারণ করে গত জানুয়ারি মাসে বিএসইসি পাঁচ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে বিএসইসি। দেশের পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক মানে পুঁজিবাজারের সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। শেখ হাসিনার দেড় দশকের শাসনামলে দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের লুটপাট, দুর্নীতি, অনিয়ম ও কারসাজির ঘটনা ঘটে। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর বিএসইসি পুনর্গঠিত হয়। পুনর্গঠিত বিএসইসির চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।

রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন শেখ হাসিনার শাসনামলের অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের ১২টি তদন্তের মধ্যে সাতটি সম্পন্ন করে প্রতিবেদন বিএসইসিতে জমা দিয়েছে। অন্যদিকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে গঠিত টাস্কফোর্স ইতোমধ্যে মার্জিন রুলস, আইপিও রুলস ও মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালার খসড়া চূড়ান্ত করে বিএসইসিতে জমা দিয়েছে। এ তিনটি বিধিমালা চূড়ান্তকরণের পর্যায়ে রয়েছে।

টাস্কফোর্সের কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে টাস্কফোর্সের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন আমার দেশকে বলেন, চলতি জুন মাসেই আমাদের কাজ সম্পন্ন করব। এ লক্ষ্যেই আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, টাস্কফোর্সকে মোট ১৭টি কর্মপরিধি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। ১৪টি কর্মপরিধির আলোকে মোট ৬টি বিধিমালার খসড়া প্রণীত হচ্ছে। এর মধ্যে তিনটি জমা দেওয়া হয়েছে আর বাকি তিনটি বিধিমালার ব্যাপারে কাজ করছি। জুনের মধ্যেই খসড়া প্রস্তুত হবে বলে আশা করছি।

টাস্কফোর্সের এ সদস্য আরো বলেন, কর্মপরিধির মধ্যে বিএসইসির সংস্কার, ডিমিউচুয়ালাইজেশন এবং মার্জার-অ্যাকুইজিশনের মতো বেশকিছু বিষয়ে পরিবর্তনের সঙ্গে আইনগত বিষয় যুক্ত থাকায় এসব বিষয়ে আমরা শুধু আমাদের সুপারিশ তুলে ধরব। যেহেতু আইন পরিবর্তনের বিষয়টি সংসদের ওপর নির্ভরশীল সেজন্য এসব বিষয় নিয়ে আমরা আলাদা কোনো কিছু করছি না।

টাস্কফোর্সের কাজের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করছি। অনেকে আমাদের কাজের সমালোচনা করেছেন, কিন্তু আমরা বিনিয়োগকারী, বাস্তবে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন ব্যক্তির পাশাপাশি বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে আমাদের প্রস্তাবগুলো তৈরি করছি। সংস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগামী দিনে দেশের পুঁজিবাজারে গুণগত পরিবর্তন ঘটবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত