আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

১ বছরের ব্যবধানে ই-কমার্সে লেনদেন বেড়েছে ৬৪ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১ বছরের ব্যবধানে ই-কমার্সে লেনদেন বেড়েছে ৬৪ শতাংশ

অনলাইনে পণ্য কেনাকাটায় ই-কমার্সের ওপর আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। টালমাটাল অর্থনীতি থেকে স্থিতিশীল অর্থনীতির কারণে দেশের এ গুরুত্বপূর্ণ খাত ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। পরিকল্পনা কমিশনের মাসিক অর্থনৈতিক আপডেটের তথ্য বলছে, এক বছরের ব্যবধানে ই-কমার্স লেনদেন বেড়েছে ৬৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ই-কমার্স লেনদেনের তথ্য থেকে জানা যায়, ২০২৩-২৪ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ই-কমার্সের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লেনদেন তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল ছিল। ওই অর্থবছর ই-কমার্সের লেনদেন ছিল ১ হাজার ৪২৬ কোটি থেকে ১ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকার মধ্যে। সদ্য শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই মাসে লেনদেন ছিল ১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। মে মাসে এ লেনদেন দাঁড়ায় ২ হাজার ৩৬৫ কোটিতে। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি প্রায় ৬৪ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

জিইডির এ বিশ্লেষণ বলছে, এই ঊর্ধ্বমুখী গতিপথ চিহ্নিত করে দেখা যায়, ই-কমার্সের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে সেপ্টেম্বর মাস থেকে। ওই মাস থেকে পরবর্তী সব মাসে গড়ে প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটির ওপর লেনদেন হয়েছে।

দারাজ, ইভ্যালি (পুনর্গঠিত), চালডালের মতো অনলাইন মার্কেটপ্লেস এবং ফ্যাশন, ইলেকট্রনিক্স ও মুদি পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বিশেষ প্ল্যাটফর্ম এই উত্থানের সুবিধা পেয়েছে। বিশ্লেষকরা এই বৃদ্ধির জন্য বেশ কয়েকটি কারণকে দায়ী করেছেন। বিশেষ করে বিশাল সংখ্যক গ্রাহক এ মুহূর্তে ইন্টারনেট জগতে প্রবেশ করেছে। দেশের ১৩ কোটি ২০ লাখ গ্রাহক এ জগতে প্রবেশ করায় আরো বেশি পরিবার অনলাইন কেনাকাটায় জড়িত হচ্ছে। উন্নত সরবরাহ-ডেলিভারি কোম্পানি এবং কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর নেটওয়ার্ক আরো বেড়েছে।

এমনকি আধা-শহুরে এবং গ্রামীণ এলাকাগুলোকেও ডেলিভারি সার্ভিসের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। আরেকটি বড় সুবিধা হলো- ই-কমার্সগুলো মোবাইল লেনদেনের (এমএফএস) সঙ্গে একীভূত হয়েছে। ফলে অধিকাংশ গ্রাহক এখন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করে কেনাকাটা করছেন।

চলতি অর্থবছর অনলাইনে পণ্য বিক্রয় কমিশনের ওপর ভ্যাটের হার ৫ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে অবশ্য চিন্তা বেড়েছে এ খাতের ব্যবসায়ীদের। বিশেষ করে ই-কমার্সে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ক্ষতির শঙ্কাই বেশি। ভ্যাট বাড়ানোর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কায় আছেন তারা।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতে এখনো বিনিয়োগকারী কম, বাজারও দুর্বল। পাশাপাশি ভেঞ্চার প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগও কম। এ খাতে ভ্যাট বাড়িয়ে সরকার কতটা রাজস্ব পাবে, তা-ও খুব একটা স্পষ্ট নয়। তারা বলেন, বাজেটে বিভিন্ন খাতে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, সে তুলনায় এ খাত থেকে খুব নগণ্য অর্থ আদায় হবে। আর লোকসানে চলা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিনিয়োগের টাকা থেকেই বাড়তি ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে।

আগে ই-কমার্স ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্য বিক্রেতারা ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) দিতেন। অর্থাৎ কোনো পণ্য বিক্রি করে ১০০ টাকা মুনাফা হলে ৫ টাকা ভ্যাট দিতে হতো; কিন্তু এখন সেই বিক্রেতাকে ভ্যাট দিতে হবে ১৫ টাকা।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ১২ কোটিরও বেশি নিবন্ধিত এমএফএস অ্যাকাউন্ট রয়েছে এবং সক্রিয় ব্যবহার ক্রমাগত বাড়ছে। ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোও দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে, অনলাইন বাণিজ্য একটি নতুন সীমানা হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।

বাংলাদেশে ই-কমার্স বাজার এখনো তুলনামূলক ছোট হলেও প্রবৃদ্ধির হার এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় দ্রুত। ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামে যেমন অনলাইন খুচরা বাজারে আগেই বিপ্লব হয়েছে, বাংলাদেশ এখন সেই ধাপে প্রবেশ করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশে ই-কমার্স বাজারের আকার কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে।

সম্ভাবনার পাশাপাশি এ খাতের কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। বিশেষ করে এ খাতের বড় সমস্যা সময়মতো পণ্য ডেলিভারি। গ্রামীণ পর্যায়ে এখনো সময়মতো পণ্য পৌঁছে দেওয়া বড় সমস্যা। নকল ও নিম্নমানের পণ্য ই-কমার্সে অহরহ হওয়ায় অনেক গ্রাহক এখনো অনলাইন শপে আস্থা রাখতে পারছেন না। তা ছাড়া প্রতারণা, ফিশিং ও সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। রিটার্ন নীতি অস্পষ্টতা থাকায় ক্রেতারা সহজে পণ্য ফেরত দিতে না পারায় অসন্তুষ্ট হন।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টিসিবির মাধ্যমে চিনি বিক্রি চলমান থাকবে: শিল্প উপদেষ্টা

স্বৈরাচার দেশে জুলুমতন্ত্র কায়েম করে সবকিছু লুটেপুটে নিয়েছে: জাহিদুল ইসলাম

৩০০ কোটি টাকা বাজেটে নতুন বাবরি মসজিদের ভিত্তি স্থাপন ভারতে

তালাকের পর আবার বিয়ে, যে ব্যাখ্যা দিলেন আবু ত্বহার স্ত্রী সাবিকুন নাহার

আমিরুলের হ্যাটট্রিকে দক্ষিণ কোরিয়াকে হারাল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
খুঁজুন