শেয়ারবাজারে মার্জিন লোনের বিপরীতে সৃষ্ট নেগেটিভ ইক্যুয়িটির ফলে সৃষ্ট আনরিয়েলাইজড লসের বিপরীতে প্রভিশনিংয়ের সময়সীমা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটজ অ্যন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) জরুরি সভায় সময় বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএসইসির পক্ষ থেকে সংবাদপত্রে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তবে এ সুবিধা গ্রহণে শর্ত জুড়ে দিয়েছে কমিশন। শর্তে বলা হয়েছে, যে সকল স্টক ব্রোকার এবং মার্চেন্ট ব্যাংকার ও পোর্টফোলিও ম্যানেজার এর নেগেটিভ ইক্যুইটি বা আনরিয়েলাইজড লস রয়েছে তাদের প্রত্যেককে নেগেটিভ ইক্যুইটি বা আনরিয়েলাইজড লসের উপর প্রভিশন সংরক্ষণের সুনির্দিষ্ট ও গ্রহণযোগ্য কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনসহ আগামী ৩০ জুনের মধ্যে কমিশনে জমা দিতে হবে।
শেয়ারবাজারে মার্জিন লোনের ফলে সৃষ্ট নেগেটিভ ইক্যুয়িটির কারণে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো। বর্তমানে বাজারে অব্যাহত পতনের কারণে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলোর আয় কমে গেছে এবং অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই লোকসানের মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় প্রভিশনিংয়ের মতো আর্থিক সক্ষমতা অনেক প্রতিষ্ঠানেরই নেই। ফলে এ নিয়ে বড় ধরনের সংকটের মুখে রয়েছে শেয়ারবাজারের মধ্যস্ততাকারী এসব প্রতিষ্ঠান। ডিএসই ব্রোকারেজ হাউস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) পক্ষ থেকে প্রভিশনিংয়ের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য বিএসইসির নিকট অনুরোধ জানানো হয়। গত বুধবার ডিবিএর একটি প্রতিনিধি দল বিএসইসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রভিশনিংয়ের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার জন্য কমিশনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এরই প্রেক্ষিতে প্রভিশনিংয়ের সময়সীমা চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে কমিশন। এর আগে কয়েক দফা সময় সীমা বেঁধে দেয়া হলেও প্রভিশনিং করেনি মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো।
এখানে উল্লেখ, শেয়ারবাজারে পোর্ট পোলিওর বিপরীতে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো বিনিয়োগকারীকে প্রদেয় ঋণকে মার্জিন লোন বলা হয়। ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে বিপুল পরিমাণ মার্জিন লোন দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে সুদসহ মার্জিন লোনের পরিমাণ ১৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এই মার্জিন লোন এখন শেয়ারবাজারের জন্য বড় ধরনের সংকট তৈরি করেছে। এটিকে শেয়ারবাজারের ‘ক্যান্সার’ বলে অভিহিত করেছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।

