উদ্যোক্তা করতে জুয়েলারি তৈরির প্রশিক্ষণ এসএমই ফাউন্ডেশনের

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ১৭: ৫২

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণ-তরুণীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে এসএমই ফাউন্ডেশন। প্রাথমিকভাবে তাদেরকে দেয়া হয়েছে জুয়েলারি তৈরির প্রশিক্ষণ। এই উদ্যোগে সহযোগিতা করেছে ইন্সপিরেশন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি (আইডব্লিউএস)।

প্রশিক্ষণে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণ-তরুণী ও তাদের অভিভাবকদেরকে জুয়েলারি শিল্প পরিচিতি, নিরাপদ কাজের পরিবেশ, বিভিন্ন উপকরণ ও সরঞ্জাম চেনা ও ব্যবহার, সহজ ডিজাইনের কানের দুল, মালা, চুড়ি তৈরি এবং রঙের ব্যবহার ও সাজানোর কৌশল সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা হয়। এছাড়া বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জন্য তুলনামুলক সহজ হওয়ায় প্রাথমিকভাবে বিডিং এবং আপ-সাইকেল পদ্ধতিতে গহনা তৈরির প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদের তৈরি পণ্য নিয়ে সমাপনী অনুষ্ঠানে একটি প্রর্দশনীর আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া ঘরে বসে মা এবং তাদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তানরা যেন ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে সেজন্য পরবর্তীতে তাঁদের চাহিদা অনুসারে ফটোগ্রাফি, ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন ও হস্তশিল্প প্রশিক্ষণ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে এসএমই ফাউন্ডেশনের।

পাশাপাশি এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিতব্য আগামী ১২তম এসএমই পণ্য মেলায় তাদের তৈরি পণ্য বিক্রয় ও বাজারজাতের জন্য স্টল বরাদ্দেরও পরিকল্পনা রয়েছে অর্থাৎ নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে তাঁদের প্রাথমিকভাবে একটি প্যাকেজ সাপোর্ট প্রদান করা হবে। ১১-১৮ আগস্ট ২০২৫ আয়োজিত প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন মো. মুসফিকুর রহমান।

তিনি বলেন, এসএমই ফাউন্ডেশন বিশ্বাস করে, এই প্রশিক্ষণ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণ-তরুণীদের প্রতিভাকে আরো সৃজনশীল করার মাধ্যমে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে আত্নবিশ্বাসী করবে। তারা হস্তশিল্পের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে ঘরে বসে আয় করতে সক্ষম হবে। ফলে তাদের সামাজিক অন্তর্ভুক্তি ও সম্মানজনক জীবনের পথ তৈরি হবে। আইডব্লিউএস-এর সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুনিরা ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা খান।

সম্মানিত অতিথি ছিলেন আইডব্লিউএস-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট দেওয়ান শামসুর রকিব, নাট্য ব্যক্তিত্ব ডা. এজাজুল ইসলাম, কন্ঠশিল্পী হায়দার হোসেন এবং নৃত্যশিল্পী মুনমনু আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মো. আব্দুস সালাম সরদার। এসএমই ফাউন্ডেশনের নতুন উদ্যোক্তা তৈরি এবং তাদের দক্ষতা উন্নয়নে ‘এসো উদ্যোক্তা হই’ এবং ‘নতুন ব্যবসা সৃষ্টি’ কর্মসূচির আওতায় এই প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনের শ্লোগান, ‘অটিজম নয় দুর্বলতা, এসো হই উদ্যোক্তা’।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান প্রায় ৩২% শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র ২০২৪ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষা বলছে, দেশের ১ কোটি ১৮ লাখের বেশি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রায় ৯৯% কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৮৫% এমএসএমই খাতে। এই খাতে প্রায় তিন কোটিরও বেশি জনবল কর্মরত আছে। অধিক জনসংখ্যা এবং সীমিত সম্পদের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এসএমই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত সুরক্ষার মাধ্যমে এসএমই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন সরকারের জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২ এসএমই নীতিমালা ২০১৯ এবং এসডিজি ২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা এসএমই ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচির সুবিধাভোগী প্রায় ২০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, যাদের ৬০%-ই নারী-উদ্যোক্তা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত