বায়তুল মোকাররম চত্বরে আয়োজন

ইসলামি বইমেলা প্রাণবন্ত করছে নারীর অংশগ্রহণ

মাহমুদুল হাসান আশিক
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১: ৪১
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১: ৪২
ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ইসলামি বইমেলা প্রাণবন্ত করে তুলছেন নারী পাঠক ও দর্শকরা। মাদরাসার শিক্ষার্থী ও আলেম-ওলামাদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যেমন বই কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন, তেমনি নারীদের আগ্রহও কম নয়। তাদের সরব উপস্থিতি আশাবাদী করছে প্রকাশক ও দোকানদারদের। তাদের জন্য মেলার আয়োজক কমিটিও রেখেছে নানা সুযোগ-সুবিধা।

গতকাল শনিবার সরেজমিনে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ ও পূর্ব চত্বর ঘুরে আন্তর্জাতিক ইসলামি বইমেলার এই চিত্র দেখা যায়।

বিজ্ঞাপন

মেলায় আসা নারীদের ইসলামি ইতিহাস, সংস্কৃতি, জীবনযাপন, উপন্যাস ও বিধিবিধান সম্পর্কিত বই কিনতেই বেশি আগ্রহী দেখা গেছে। তাদের অনেকেই মনে করেন, এসব বই পড়লে তাদের জ্ঞান সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনে ইসলামি শরিয়া মেনে চলা ও আদর্শ চর্চা আরো সহজ হবে।

মেলায় আগত নারী পাঠকদের জন্য রাখা হয়েছে ফিমেল জোন, আলাদা ফুডকোর্ট, আলাদা নামাজের ব্যবস্থা ও শিশুদের জন্য ‘কিডস প্লে জোন’। যদিও এখন পর্যন্ত নারীদের জন্য আলাদাভাবে তৈরি করা হয়নি টয়লেট।

পল্লবী থেকে সন্তান নিয়ে মেলায় আসা নিশাত জাহান আমার দেশকে বলেন, ‘আমরা চাই সন্তানদের সঠিক পথে গড়ে তুলতে। তাই ইসলামি ইতিহাস ও বিধিবিধান জানা আমাদের জন্য অপরিহার্য। বিকৃত সংস্কৃতি থেকে সন্তানদের দূরে রাখতে ইসলামি কার্টুনসমৃদ্ধ ও নবী-রাসুলদের ইতিহাস সম্পর্কে কিছু বই কিনেছি সন্তানের জন্য।’

ডেমরা থেকে বড় ভাইয়ের সঙ্গে আসা মারিয়াম আক্তার আমার দেশকে বলেন, আমি দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তিন বছর ধরে এই মেলায় আসি। আগের চেয়ে এবারের আয়োজন অনেক ভালোভাবে সাজানো এবং বড়। আজকে আমি ‘দ্য রিভার্স, কীভাবে আল্লাহর প্রিয় হবো?’ ইত্যাদি ইসলামি ইতিহাস ও সংস্কৃতিনির্ভর কয়েকটি বই কিনেছি। এই অঞ্চলে ইসলামি সংস্কৃতিকে উজ্জীবিত করতে এই মেলা প্রাণবন্ত করে তুলতে হবে। আমাদের তরুণ-তরুণীদের আগ্রহ ও উপস্থিতির মাধ্যমেই এটি সম্ভব। এমনকি আমাদের সবাইকে আসতে হবে, বই কিনতে হবে, পড়তে হবে এবং সেই জ্ঞানকে ছড়িয়ে দিতে হবে সবার তরে।

মেলা কমিটির সদস্য রুহামা পাবলিকেশনের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম আমার দেশকে বলেন, ইসলামি সংস্কৃতি, ইতিহাস ও নারী-সংক্রান্ত বইয়ের চাহিদা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এতে বোঝা যাচ্ছে, ইসলামি বই পড়ার ক্ষেত্রে নারী পাঠকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। আর সেজন্য আমরা এবার নারীদের জন্য ফিমেল কর্নারের ব্যবস্থা রেখেছি। তাদের পর্দা ঠিক রেখে নামাজের ব্যবস্থাও আছে। খাবারের জন্যও আলাদাভাবে ফুডকোর্ট রাখা হয়েছে। এছাড়া তাদের সঙ্গে আসা শিশুদের জন্য আছে ‘কিডস প্লে জোন’। আলাদা ওয়াশরুমের ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত করতে পারিনি, তবে চেষ্টা চলছে।

মাসব্যাপী এ বইমেলায় ১৯৯টি স্টল আছে। এতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, দেশের স্বনামধন্য ইসলামি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান, নেতৃস্থানীয় ইসলামি পুস্তক ব্যবসায়ী ছাড়াও মিসর, লেবানন ও পাকিস্তানের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এ মেলায় লেখক কর্নার, ফুড কর্নার, আলোচনা সভা ও কবিতা পাঠের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মেলাটি প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ১০টা এবং ছুটির দিনে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত