ঢাকায় অক্টোবর গণহত্যার ৬৪তম বার্ষিকী পালন

আলজেরিয়া ও বাংলাদেশের সংগ্রামের ইতিহাস একই: রাষ্ট্রদূত সাইদানি

কূটনৈতিক রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ০৬

সংহতি ও অঙ্গীকার- এই স্লোগান সামনে নিয়ে শুক্রবার বাংলাদেশে অবস্থিত আলজেরিয়া দূতাবাস ১৯৬১ সালের ১৭ অক্টোবরের গণহত্যার ৬৪তম বার্ষিকী পালন করেছে। ঔপনিবেশিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে আলজেরীয়দের সাহস ও ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে ২০২১ সাল থেকে এই তারিখটি আলজেরিয়ায় জাতীয় অভিবাসন দিবস হিসেবে স্বীকৃত। আলজেরিয়ার জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়, এরপর গণহত্যার শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বারিধারায় আলজেরিয়া দূতাবাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আবদেলউহাব সাইদানি ১৯৬১ সালের ১৭ অক্টোবরের ঘটনার ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, আলাদা ভূখন্ড হলেও আলজেরিয়া ও বাংলাদেশের সংগ্রামের ইতিহাস একই। সাহসের একই কালিতে লেখা হয়েছে দুই দেশের ইতিহাস।

বিজ্ঞাপন

প্যারিসের ঐতিহাসিক দিনটির উল্লেখ করে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, এই দিনটি শুধুমাত্র শোক প্রকাশের জন্য নয়, এটি সাহসকে সম্মান জানানোর, সত্যকে পুনরুদ্ধার করার এবং আমাদের সাধারণ মানবিকতাকে পুনর্ব্যক্ত করার দিন।

তিনি বলেন, প্যারিসে শীতের সেই রাতে ৩০ হাজারেরও বেশি আলজেরীয় পুরুষ, নারী এবং এমনকি শিশুরাও শান্তিপূর্ণভাবে শহরের রাজপথে নেমেছিল। তারা ফ্রান্সে মুসলিমদের ওপর আরোপিত বৈষম্যমূলক কারফিউর প্রতিবাদে এবং আলজেরিয়ার স্বাধীনতার দাবিকে সামনে আনার লক্ষ্যে, জাতীয় মুক্তি ফ্রন্টের ফরাসি শাখার আহ্বানে রাস্তায় নেমেছিল। তাদের হাতে ছিল না কোনো অস্ত্র, ছিল কেবল ন্যায়বিচার, মর্যাদা ও স্বাধীনতার স্বপ্ন।

আবদেলউহাব সাইদানী বলেন, কিন্তু তাদের (বিক্ষোভকারীরা) জন্য আলোচনা নয়, অপেক্ষা করছিল অন্ধকার। রাষ্ট্র শান্তিকে রুখে দিয়েছিল সহিংসতা দিয়ে, মানবতার জবাব দিয়েছিল ঘৃণার মাধ্যমে। অনেকে নির্যাতনের শিকার হন, গুলিবিদ্ধ হন, কিংবা সেঁন নদীতে নিক্ষিপ্ত হন। তাদের আর্তনাদ হারিয়ে যায় রাতের নিস্তব্ধতায়, কিন্তু তাদের সাহস উজ্জ্বল হয়ে ওঠে সেই নীরবতার মাঝেই।

আলজেরিয়ার রাস্ট্রদূত বলেন, এটি ছিল ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনের অন্যতম নৃশংস দমন-পীড়নের একটি অধ্যায়, যা অন্যায়ের নিষ্ঠুরতা ও এক অবিনাশী জাতির অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে যুগপৎভাবে তুলে ধরে। ১৭ অক্টোবরের সেই গণহত্যা আলজেরীয় জাতিকে দমন করতে পারেনি—বরং উল্টো, তাদের আরো উদ্দীপ্ত করেছিল।এটি পরিণত হয়েছিল স্বাধীনতার চূড়ান্ত পথের এক প্রজ্বালিত স্ফুলিঙ্গে—ভয়ের উপরে ঐক্যের জয় ঘোষণাকারী এক অমর দলিল। বিশ্ব যদিও দেরিতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল, ইতিহাস কিন্তু মনে রেখেছে।

আলজেরিয়ার জন্য স্মৃতির দিনটি বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়েও গভীরভাবে নাড়া দেয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত সাইদানী বলেন, আমরাও জানি স্বাধীনতার মূল্য—আমরাও বুঝি ত্যাগের ভার, শোকের যন্ত্রণা এবং দৃঢ়তার বিজয়। আমাদের ইতিহাস আলাদা ভূমিতে লেখা হলেও, সাহসের একই কালি দিয়ে রচিত।

তিনি বলেন, আলজেরিয়া এবং বাংলাদেশের মানুষ উভয়েই দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে—ন্যায়বিচারের প্রতি বিশ্বাস ও মানব মর্যাদার প্রতি আস্থায় উদ্বুদ্ধ হয়ে।

আবদেলউহাব সাইদানী বলেন, আমরা একত্রিত হয়েছি ভ্রাতৃত্বপূর্ণ দুটি জাতি হিসেবে—শুধু কূটনৈতিক সম্পর্কে নয়, বরং সংগ্রাম ও সংহতির আত্মায়ও আমরা একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরা একসাথে দাঁড়াই, যেন অতীতের সেই ট্র্যাজেডিগুলো আর কখনো না ফিরে আসে, এবং সেখান থেকে নেওয়া শিক্ষা আমাদের ন্যায় ও শান্তিনির্ভর ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।

সাব-জেলে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তারা, সরকারের কাছে যে আহ্বান জানালেন ব্যারিস্টার আরমান

অসদাচারণের দায়ে টঙ্গী পাইলট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

গুম-খুনে জড়িত ১৫ সেনা কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত। ট্রাইব্যুনালে হাজির। সাবজেলে প্রেরণ

এবার ১ টাকায় গরুর মাংস বিতরণের ঘোষণা সেই এমপি প্রার্থীর

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত