হজযাত্রীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে আশকোনা হজ ক্যাম্প। নির্বিঘ্নে চলছে হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন সার্ভিস। সবাই আল্লাহর ঘরে যাওয়ার অপেক্ষায়। তবে তাদের মধ্যে ফ্লাইটের জন্য উৎকণ্ঠা দেখা গেছে। গতকাল বুধবার আশকোনা হজ ক্যাম্প ঘুরে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়।
প্রতি বছর হজে যাওয়ার আগে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের যাত্রীরা আশকোনা হজ ক্যাম্পে ওঠেন। নির্দিষ্ট সময়ে বিমানের ফ্লাইট ধরতে কয়েক দিন আগেই ক্যাম্পে আসতে শুরু করেন দূর-দূরান্তের হজযাত্রীরা। এবারের নিয়ম অনুযায়ী ফ্লাইটের অন্তত ছয় ঘণ্টা আগে ক্যাম্পে উপস্থিত হতে হচ্ছে হজযাত্রীদের।
জামালপুর থেকে আসা কবির মোল্লা স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে এবার হজ করতে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমাদের ফ্লাইট বুধবার রাতে কিন্তু আমরা আরো দুদিন আগে এসেছি। ক্যাম্পের পরিবেশ কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা রাতে মশারি না টাঙিয়ে ঘুমাচ্ছি এবং এতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
তৈফিকা জামাল এসেছেন কুষ্টিয়া থেকে। গতকাল ভোরে পৌঁছেছেন হজ ক্যাম্পে। তিনি বলেন, ক্যাম্পের ডরমেটরিতে আমরা অনেকে একসঙ্গে থাকছি। আর খাবার জন্য ক্যাম্পের মধ্যে ক্যান্টিন আছে, আবার চাইলে বাইরে গিয়েও খেয়ে আসা যায়। তাই থাকা-খাওয়ার তেমন সমস্যা হচ্ছে না। অনেকে একসঙ্গে থাকলেও বাথরুম ও গোসলখানার সংখ্যা বেশি থাকায় সেখানেও তেমন সমস্যা নেই।
হজযাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে নিয়োজিত আছেন অনেক পুলিশসহ নিরাপত্তাকর্মীরা। খোলা হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কন্ট্রোল রুম। পুলিশের কনস্টেবল এমদাদ হোসেন আমার দেশকে বলেন, এবার হজ ক্যাম্পের প্রবেশমুখে আমাদের চেকপোস্ট খোলা হয়েছে। পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য নিয়োজিত আছে।
সিরাজগঞ্জ থেকে আগত স্কুলশিক্ষক শাখাওয়াত হোসেন আমার দেশকে জানান, হজে যাব বলে অনেক আগে থেকেই ব্যাংকে টাকা জমিয়েছি। আমাদের শেষ গন্তব্য কবর। আল্লাহর ঘরে যাওয়ার জন্য আমাদের মুসলমানদের প্রচণ্ড ইচ্ছা সবারই থাকে। আল্লাহ যাকে কবুল করেন। এখন পর্যন্ত হজক্যাম্পে আমাদের তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। এখানকার সবাই অনেক সহযোগিতা করছে।
আশকোনা হজ অফিসের পরিচালক লোকমান হোসেন আমার দেশকে জানান, বুধবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, সাউদিয়া এয়ারলাইনস ও নাস বাজেট এয়ারলাইনসের ১৩টি ফ্লাইটে মোট ৫ হাজার ১৯৭ জন হজযাত্রী জেদ্দা ও মদিনা পৌঁছাবেন। হজযাত্রীদের বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন হজ ক্যাম্পে এবং সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সম্পন্ন করা হচ্ছে যাতে জেদ্দা বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাদের কোনো ধরনের সমস্যা না হয়। নির্বিঘ্নে তারা হোটেল বা বাসায় চলে যেতে পারেন।

