শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে এসে সাংবাদিকদের ওপর বর্বর হামলার ঘটনা ঘটেছে। রোববার সকাল পৌনে ১০টার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দেওয়ার সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন কর্মী-সমর্থক এই হামলা চালায়।
এতে অন্তত ৫ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। হামলার ঘটনায় উপস্থিত সাংবাদিকরা বাকরুদ্ধ ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা জানান, সোহাগ নামের এক স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সাংবাদিকদের সামনে দাঁড়িয়ে ফুটেজ ধারণে বাধা সৃষ্টি করেন। এ সময় ফটো জার্নালিস্ট ডালিমসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা তাকে সৌজন্যমূলকভাবে একটু সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান।
কিন্তু অনুরোধ উপেক্ষা করে সোহাগ সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে হঠাৎ সোহাগ ও তার সঙ্গে থাকা উশৃঙ্খল কর্মীরা ডালিমের ক্যামেরা ভেঙে ফেলেন।
হামলায় আহত হন দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার ও মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের (এমআরএ) সভাপতি ফখরুল ইসলাম। তিনি আমার দেশকে বলেন, আমার শার্ট ধরে টেনে হিঁচড়ে সব ডিভাইস ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। আমরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম—এর জবাবে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
হামলার প্রতিবাদ করতে গেলে সময়ের আলোর রিপোর্টার মাহবুব আলম শ্রাবণকে সজোরে আঘাত করেন সোহাগ। আহত সাংবাদিক শ্রাবণ বলেন, ফখরুল ইসলামের ওপর হামলার পর আমরা প্রতিবাদ জানাতে যাই। সঙ্গে সঙ্গেই সোহাগ আমার ওপর হামলে পড়ে।

এ ঘটনায় আহত অন্যান্য সাংবাদিকরা হলেন, জাগো নিউজের রিপোর্টার রাকিব হাসান, বাংলা নিউজ ২৪ ডটকমের রিপোর্টার সাইমুম মুবিন পল্লব, ঢাকা পোস্টের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার মাহমুদ আল মামুন মারুফ, জাগো নিউজের ভিডিও জার্নালিস্ট শাহরিয়ার রাকিব।
ঘটনার পর স্বেচ্ছাসেবক দলের স্থানীয় নেতা হাফিজ দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন।
এদিকে সভাপতির ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন (এমআরএ)। সংগঠনটির সেক্রেটারি আক্তারুজ্জামান এক বিবৃতিতে বলেন, সন্ত্রাসী কায়দায় কোনো দলের কর্মী সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালাতে পারে না।
এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। ভবিষ্যতে যেন সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়, তা নিশ্চিত করা সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক সংগঠনের দায়িত্ব।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণস্থলে এমন হামলাকে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের ওপর সরাসরি আঘাত হিসেবে দেখছেন সাংবাদিক নেতারা। দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।

