নতুন বাজারে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ, পুলিশের লাঠিচার্জ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৫, ০৯: ২০
আপডেট : ২১ জুন ২০২৫, ১২: ০৮
শনিবার নতুন বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আমার দেশ

ক্যাম্পাসে বিভিন্ন আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ২৬ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের ঘটনায় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এই বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী সিন্ডিকেট ও স্বেচ্ছাচারী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে রাজধানীর নতুন বাজার রাস্তায় ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

শনিবার সকাল সোয়া ৮টার পর থেকেই এই কর্মসূচি শুরু হয়। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দাবি না মানা পর্যন্ত এই ব্লকেড চলবে বলে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন। এরই মধ্যে সেখানে আইনশৃংখলাবাহিনীর সদস্যরাও জড়ো হয়েছেন।

শনিবার সোয়া ১১টার দিকে একাধিকবার সড়ক থেকে শিক্ষার্থীদের সরানোর চেষ্টা করেও পারেনি পুলিশ। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে ৬ জন আহত হয়। পরে আবারও শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে সেখানে শুয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, সকাল ৯ টার দদিকে ইউআইইউ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা নতুন বাজার সড়কে অবস্থান নেন। তারা বিভিন্ন স্লোহান দিতে থাকেন। এ সময় কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বাড্ডাগামী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে ভাটারা থানার ওসি রাকিবুল হাসান জানান, পুলিশ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করছে।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানায়, ২৬ ও ২৭ এপ্রিল ইউআইইউ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে উপাচার্যসহ ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। ২৮ এপ্রিল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ২০ মে থেকে অনলাইন ক্লাস চালু হলেও শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ তা প্রত্যাখ্যান করে সরাসরি ক্লাস ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, যাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের অনেকেই জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধা। ওই আন্দোলনের সময় যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ছিল, একইভাবে এখন জুলাই যোদ্ধাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।

তারা জানান, শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত খোলার দাবির বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনেও একাধিকবার বৈঠক করেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে এখনো কোন সমাধান আসেনি।

badda-1

সূত্রমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কারসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনের এক পর্যায়ে ২৬ এপ্রিল উপাচার্যসহ শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মুখে ইউআইইউর উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কাশেম মিয়াসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশি সংখ্যক শিক্ষক পদত্যাগ করেন।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ২৮ এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। এ পর্যন্ত ২৬ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পরে ২০ মে থেকে অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রম শুরু হয়, যা ঈদের ছুটির আগ পর্যন্ত বহাল ছিল। ঈদুল আজহার ছুটি শেষে ২১ জুন থেকে ফের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গুটিকয়েক শিক্ষার্থীর অন্যায় এবং মবমূলক আচরণের জন্য দশ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী আজ এক চরম হতাশা নিমজ্জিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সবার কাছে এজন্য দুঃখ প্রকাশ করছে।

তবে অতি শিগগিরই এইসব সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহায়তায় ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দৃঢ় প্রতিজ্ঞা। স্বার্থান্বেষী কোন মহলের প্ররোচনায় বিপথে যাওয়া কিছু শিক্ষার্থীর কারণে যাতে আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগ্রহণ ব্যাহত না হয়, সে বিষয়ে আমরা সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করছি।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত