আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

এনইআইআর সংস্কারে রাজি বিটিআরসি ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত অবরোধ স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার
এনইআইআর সংস্কারে রাজি বিটিআরসি ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত অবরোধ স্থগিত

ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থার সংস্কারে সম্মতি দেওয়ায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সামনে থেকে চলমান অবরোধ ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেছেন দেশের মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা। তবে এনইআইআর সংস্কারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত দেশের সকল মোবাইল ফোন মার্কেট বন্ধ থাকবে।

রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারীর আশ্বাসের ভিত্তিতে অবরোধ স্থগিতের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, এনইআইআর সংক্রান্ত সকল জটিলতা নিরসনে বিটিআরসিতে এক যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা, এনবিআর চেয়ারম্যান, বাণিজ্য সচিব, মোবাইল ফোন ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশন এবং মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি)-এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।

রোববার সকাল ১১টার দিকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) সংস্কারসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবনের সামনে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশের ব্যানারে সড়ক অবরোধ করা শুরু করে। এতে ওই ভবনসংলগ্ন সড়ক ও আশপাশের সড়কগুলোয় দেখা দেয় তীব্র যানজট। যানজট ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের শ্যামলী, শিশু মেলাসহ আগারগাঁওয়ের আশপাশের সড়কগুলোতেও। চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে থেকে শুরু করে যানজট ছড়িয়েছে কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়া পর্যন্ত।

পুলিশ যানবাহন গুলোকে ভেতরের অলিগলিগুলোতে বিকল্পপথ দেখিয়ে দিচ্ছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এনইআইআর বাস্তবায়িত হলে লাখ লাখ ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নতুন এই নিয়মের ফলে বিশেষ একটি গোষ্ঠী লাভবান হবে এবং বাড়তি করের চাপে গ্রাহক পর্যায়ে মোবাইলের দাম বেড়ে যাবে। ব্যবসায়দের আরও দাবি, এনইআইআর সংশোধন ছাড়া বাস্তবায়ন-জনস্বার্থ নয়, বাজার একচেটিয়া করার ভয়ংকর ফাঁদ। এই সিস্টেম সংশোধন ছাড়া চালু হলে পুরো মোবাইল বাজার মাত্র নয়টি কোম্পানির দখলে চলে যাবে। সাধারণ মানুষের আর কোনো বিকল্প থাকবে না। বাজারে প্রতিযোগিতা শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে, আর একচেটিয়া ক্ষমতার কারণে এই কোম্পানিগুলো দামে ইচ্ছামতো ছড়ি ঘোরাবে।

জানা গেছে, এই বিক্ষোভ প্রায় ১ হাজার মোবাইল ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মী যোগ দিয়েছেন। সকাল বেলা বাস ভরে, ব্যক্তিগত উদ্যোগে বসুন্ধরা, যমুনা ফিউচার পার্কসহ বিভিন্ন বিপণিবিতান থেকে এসে তারা বিটিআরসির সামনে জড়ো হন।

সড়ক অবরোধকারী আফতাবউজ্জামান নামে একজন মোবাইল ব্যবসায়ী আমার দেশকে জানান, সরকার গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর একটা সিন্ডিকেটের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েই এই এনইআইআর বাস্তবায়ন করছে। এর ফলে পথে বসতে যাচ্ছে কয়েক লাখ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিনি আরও বলেন, “আমার দোকানের ৬৬ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ আছে। এখানে অনেক ব্যবসায়ী আছেন, যাদের কয়েক কোটি টাকার লোন আছে। স্টকে অনেক মাল আছে। এগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত না দিয়েই সরকার জবরদস্তি করে এই এনইআইআর বাস্তবায়নের তোড়জোড় করছে।

আরেক মোবাইল ব্যবসায়ী আফতাবউজ্জামান বলেন, এইখানে তো কেউ লুকিয়ে-চুরিয়ে ব্যবসা করে নাই। সবাই প্রকাশ্যে বড় বড় শপিংমলে শোরুম নিয়ে ব্যবসা করছে। তাহলে এতদিন সরকার দেখেনি কেন।

এ বিষয়ে শেরেবাংলা নগর থানার পরিদর্শক মাসুদ রানা জানান, আমরা ব্যবসায়ীদের বুঝিয়ে সড়ক ছেড়ে চলে যেতে বলেছি। কিন্তু তারা যায়নি।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন