আজহারের মুক্তিতে ঢাবিতে বামপন্থীদের বিক্ষোভ, পাল্টাপাল্টি স্লোগানে হট্টগোল

ঢাবি সংবাদদাতা
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৫, ২০: ১১
আপডেট : ২৭ মে ২০২৫, ২১: ৫৮

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের বেকসুর খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল বাম ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে রাজু ভাষ্কর্যের পাদদেশে কয়েকজন ঢাবি শিক্ষার্থী পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হলে বিক্ষোভে হট্টগোল দেখা দেয়।

বিজ্ঞাপন

‘জামাত শিবির রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’ স্লোগানের জবাবে ‘শাহবাগ নিপাত যাক, ইনসাফ জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেন তারা। পাল্টা স্লোগান দেয়া শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘শাহবাগের বিচারহীন সংস্কৃতিতে যারা বিশ্বাসী, তাদের আস্থা শুধু হাসিনার আমলের বিচার ব্যবস্থায়। নতুন বাংলাদেশে কেউ ন্যায় বিচার পেয়ে ইনসাফ ফিরে পেলে, তাদের তা সহ্য হয় না।’

এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র মৈত্রীসহ বিভিন্ন বামধারার সংগঠন অংশ নেয়।

বিকেল ৫টার দিকে মধুর ক্যান্টিনে সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা জড়ো হন। সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে কলাভবন, আইবিএ এবং শাহবাগ এলাকা প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশে বক্তৃতা করেন ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা।

সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের দশ মাস পরে আমরা দেখতে পেলাম একাত্তরের সাজাপ্রাপ্ত আলবদর কমান্ডার আজহার বেকসুর খালাস পেয়েছে। এই রায় রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা, এই সরকারের আমলে বিচারহীনতা, সন্ত্রাসমুক্তির নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির চিত্র স্পষ্ট হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘একাত্তরে যারা পাকিস্তানের দালালি করেছে, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, তাদের এই দেশে রাজনীতি করতে দেওয়া যাবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি মানবতাবিরোধীদের সঙ্গে আপস করে, তবে তাদের পরিণতি হবে আগের সরকারের মতোই ভয়াবহ।’

সমাবেশে ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল বলেন, ‘আজকের দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক। স্বাধীন বিচার বিভাগের স্বপ্নে আজ শেষ পেরেক মারা হয়েছে। যে আজহার রংপুরে আলবদর বাহিনীর কমান্ডার ছিল, যিনি সরাসরি গণহত্যায় জড়িত ছিলেন, সেই ব্যক্তিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। এটা শুধু বিচার ব্যবস্থার ওপর নয়, গোটা জাতির ওপর এক ধরনের চপেটাঘাত।’

তিনি আরো অভিযোগ করেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি, বরং তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করছে। এটা গণঅভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।’

বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো এ রায়ের প্রতিবাদে শিগগিরই বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে সমাবেশে জানানো হয়।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত