আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত বেরোবির ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী

ইমন আলী, বেরোবি
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ১৮

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পার করছে। তবে এখন পর্যন্ত আবাসন সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি। ক্যাম্পাসের মোট শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী আবাসিক হলের সুবিধা পেলেও বাকি ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী রংপুর শহরের বিভিন্ন এলাকার মেস ও ভাড়া বাসায় থাকেন।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি অনুষদের ২২টি বিভাগে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। এর বিপরীতে আবাসিক হলে আসন সিট রয়েছে মাত্র ৮২৪টি। সে হিসেবে আবাসিক হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ১০ শতাংশ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে আবাসন সংকটই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা বড় সমস্যা। দুর্নীতির অভিযোগে নির্মাণকাজ থমকে থাকা ১০ তলা বিশিষ্ট ছাত্রীদের হলসহ আবাসিক হল রয়েছে মাত্র চারটি। এর মধ্যে বিজয়-২৪ হলে আসন সংখ্যা ২৪০ টি, শহিদ মুখতার ইলাহী হলে আসন সংখ্যা ২৪০টি ও মেয়েদের জন্য শহীদ ফেলানী হলে আসন সংখ্যা রয়েছে ৩৪৪ টি।

আবাসিক সংকটের কারণে বাকি ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থীর থাকতে হচ্ছে মেস ও ভাড়া বাসায়। এ সুযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে গড়ে উঠেছে মেস বাণিজ্য। বিকল্প না থাকায় মেস মালিকদের স্বেচ্ছাচারী আচরণ সহ্য করেই থাকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীর মো. এনামুল হক শাওন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ১৮ বছরে পর্দাপণ করতে যাচ্ছে, এখনো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদা আবাসন সংকট চরমে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র ১০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আসবান ব্যবস্থা রয়েছে! সেটিও চরম অব্যবস্থাপনায় চলছে বছরের পর বছর। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী আসে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে,এসকল শিক্ষার্থীদের সামর্থ্যের সংকুলান না হওয়া সত্ত্বেও, আবাসন সংকট থাকায়, মোটা অংক খরচে মেসে থাকতে হয় বাধ্য হতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সার্বিক সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়কে যুগোপযোগী করে তোলা প্রয়োজন, সেখানে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে রয়েছে কয়েকগুণ। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০% শিক্ষার্থী, আবাসন সংকটে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে, দ্রুত সময়ের মধ্যে, আবাসন সংকট নিরসন করে শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠ পরিবেশ প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মুমিনুল ইসলাম মুমিন বলেন, পড়াশোনা করা অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রতিদিন আবাসনের অভাব নামের এক বাস্তব সংগ্রামের মুখোমুখি হচ্ছেন। প্রায় আট হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমিত হল সুবিধা রয়েছে যা বিশ্ববিদ্যালয় বাকি ৯০% শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই কষ্ট জনক। আমরা যারা আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থী তাদের দূর এলাকা থেকে এসে উচ্চ ভাড়ার মেস বা অনিরাপদ পরিবেশে থাকতে হচ্ছে। এতে পড়াশোনার পাশাপাশি মানসিক চাপ ও আর্থিক কষ্টে ভুগতে হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকটের বিষয়টি অবগত । আমি বিশ্ববিদ্যালয় আসার পর থেকেই এই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার প্ল্যান জমা দিয়েছি সেখানে ছেলেদের এবং মেয়েদের জন্য আরও বেশ কিছু হল বরাদ্দ আছে। মাস্টার প্ল্যান এর কাজ শেষ হলে আবাসন সমস্যা অনেকটা নিরসন হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত