তিন সাংবাদিককে ‘জানোয়ার’ বললেন ছাত্র মৈত্রী সভাপতি

প্রতিনিধি, চবি
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫০
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭: ২১

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) তিন সাংবাদিককে জানোয়ার বললেন শাখা ছাত্র মৈত্রী সভাপতি জশদ জাকির। শনিবার রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে এ নিয়ে স্ট্যাটাস দেন তিনি। ওই স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, জানোয়ারদের মতো হলুদ সাংবাদিকতা যেন গিলে না খায় ঢাকা ডায়েরিকে। এক সাংবাদিককে তিনি ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, সত্যের পথে লড়াই চলমান থাকুক।

বিজ্ঞাপন

তিন সাংবাদিক হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাইজিংবিডি ডটকমের প্রতিনিধি মিজানুর রহমান, প্রথম আলোর হাসান আবরার তানভীর ও যমুনা টিভির সাংবাদিক।

এ মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে জশদ জাকির আমার দেশকে বলেন, আমি ওইটা লেখেছি এই জায়গায় থেকে যে, প্রতিনিয়ত যারা একটি নির্দিষ্ট ব্যাপারকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করে কিংবা সেটাকে নানাভাবে অপপ্রচার করে। আমি মূলত রাগ-ক্ষোভের জায়গায় থেকে তাদেরকে এ কথা বলেছি।

তিনি বলেন, এখানে চলমান আন্দোলনের ব্যানার হচ্ছে ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’। কিন্তু আমার রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে, সেটাকে যখন বাদ দিয়ে সার্বজনীন স্বার্থে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আন্দোলন করছি তখন এগুলো (রাজনৈতিক পরিচয়) কেন সামনে আসবে? এগুলোতো নিছক তাদের অসচেতনতা না?

রাজনৈতিক ব্যানার ব্যবহার না করার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, রাজনৈতিক ব্যানারে সংকট হচ্ছে এখানে একাধিক সংগঠন রয়েছে। তাদের সাথে মত-বিরোধের জায়গা তৈরি হয়। আর আমাদের এখানে যে সংঘর্ষ হয়েছে এটা কোনো রাজনৈতিক সংঘর্ষ না। এখানে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সংঘর্ষ হয়েছে। ওই দুইদিন যেমন রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার না করে রাস্তায় ছিলাম শিক্ষার্থীদের সঙ্গে, তেমনি এখন কোনো রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়াই শিক্ষার্থীদের পক্ষে লড়াইটা করতে চাই।

জানতে চাইলে রাইজিংবিডি ডটকমের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মিজানুর রহমান বলেন, গতকাল আমরা কয়েকজন নিউজ করার কারণে চবি বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আমাদের ‘জানোয়ার’ বলে সম্বোধন করেছেন। যেটা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য চরম হুমকিস্বরূপ। এরকম অশ্রাব্য ভাষা একজন ছাত্রনেতা থেকে প্রত্যাশিত না।

তিনি বলেন, আজকেও পেশাগত দায়িত্ব পালনে সংবাদ সংগ্রহের সময় প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমাকে হেনস্তা করেছে নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার। এ সময় গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের ধ্রুব বড়ুয়াসহ তাদের আরো কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।

নারী অঙ্গনের সংগড়ক সুমাইয়া শিকদার আমাকে বলেন, পরবর্তী কর্মসূচিতে আসলে নিজের পিঠে হলুদ সাংবাদিক লিখে আসবেন। গতকাল (৬ সেপ্টেম্বর) আমাদের কর্মসূচিতে আপনি ঘণ্টাখানেক প্রশ্ন করে শুধু পেচাইছেন কিন্তু পরবর্তীতে এমন নিউজ করলেন কেন? এ সময় তাকে উত্তেজিত অবস্থায় দেখা যায়। তবে এরপর বিষয়টা নিয়ে আমাদের আলোচনা হলে মীমাংসা হয়। সেখানে তিনি আমাকে হেনস্তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

প্রসঙ্গত, শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নামফলক মুছে দিয়ে ‌‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লিখে দিয়েছেন বামপন্থি কয়েকজন শিক্ষার্থী। ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এই ঘটনার সংবাদ প্রকাশের জেরে মূলত তিনি এ মন্তব্য করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে, শাখা গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের আহ্বায়ক ধ্রুব বড়ুয়া, নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার এবং বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুদর্শন চাকমা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত