৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সময়কে অবাস্তব ও বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে রেললাইন অবরোধের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পরীক্ষার্থীরা। রোববার সকাল থেকে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা মিছিলসহকারে আব্দুল জব্বার মোড় সংলগ্ন রেললাইন এলাকায় জড়ো হন। সকাল সাড়ে ১১টায় তারা ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে দেন। এর ফলে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী রেল চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়।
পরে যাত্রীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে প্রায় তিন ঘণ্টা পর বেলা আড়াইটার দিকে তিস্তা এক্সপ্রেস চলতে দেওয়া হয়। তবে ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার পরও শিক্ষার্থীরা রেললাইন অবরোধ করে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন। তারা ঘোষণা দেন দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘সবাই পায় ছয় মাস, আমরা কেন দুই মাস’, ‘এক দুই তিন চার, পিএসসি তুই স্বৈরাচার, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ, সময় চাই, যৌক্তিক সময় চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, সরকারি চাকরিতে বৈষম্য নিরসনের জন্য যে জুলাই গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, সেই চাকরির ক্ষেত্রেই আবার নতুন বৈষম্যের উদ্ভব হয়েছে। পূর্বের যেসব বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত সময় দেওয়া হতো, সেখানে এই বছর শুধুমাত্র নতুন ব্যাচের জন্য মাত্র ২ মাস সময় দেওয়া হয়েছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটি আমাদের কোনো অযৌক্তিক দাবি নয়। পিএসসিকে এটি মানতেই হবে। যে পর্যন্ত পিএসসি এই সময় পরিবর্তন না করছে, সেই পর্যন্ত অবরোধ চলবে।
আরেক শিক্ষার্থী মেহরাজ হাসান রাফি বলেন, শিক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষার জন্য ন্যূনতম প্রস্তুতির সময় দিতে হবে, যাতে তারা ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারে। পিএসসি যদি আমাদের সঙ্গে স্বৈরাচারী আচরণ চলমান রাখে, তাহলে আমাদের অবরোধও চলমান থাকবে।
ট্রেন যাত্রীরা আব্দুল কাদির বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। তবে জনদুর্ভোগ যাতে না হয় সেই দিকেও তাদের নজর দিতে হবে। তাদের যা দাবি দাওয়া আছে তা প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় ব্যাক্তিদের সাথে আলোচনা করে সমাধান করতে হবে। প্রায় তিন ঘন্টা যাবৎ ট্রেনে আটকে আছি। যা প্রচন্ড বিরক্তিকর।
বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, বিসিএস কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো যদি শিক্ষার্থীদের দাবি ন্যায্য হয়, তা অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে। আর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বলতে চাই দেশের আইন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা মাথায় রেখে যেকোনো আন্দোলন নিয়মতান্ত্রিকভাবে হওয়া উচিত। অযথা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হওয়া মোটেও কাম্য নয়।

