র‍্যাগিংয়ের অভিযোগে বাকৃবির ৩ ছাত্রী বহিষ্কার

প্রতিনিধি, বাকৃবি
প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৫, ১২: ৪১

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) তাপসী রাবেয়া হলে কৃষি অনুষদের প্রথমবর্ষের এক ছাত্রীকে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগে তিন ছাত্রীকে বহিষ্কার ও দুই ছাত্রীকে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৭ জুন) বাকৃবির তাপসী রাবেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইসরাত জাহান শেলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বহিষ্কৃত ছাত্রীরা হলেন, কৃষি অনুষদের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মারিয়া সুলতানা মীম। তাকে ১২ মাসের জন্য হল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া একই অনুষদের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জোবায়দা জান্নাত সোহা এবং আশিকা রুশদাকে ৬ মাসের জন্য হল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এছাড়াও প্রভোস্টের আওতাধীন শাস্তি অনুসারে কৃষি অনুষদের দ্বিতীয়বর্ষ ও প্রথমবর্ষের অন্য ২ জনকে ১ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড মো হেলাল উদ্দীনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অর্ডিন্যান্স ফর স্টু‌ডেন্ট ডিসিপ্লিন’ এর ৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়।

শাস্তিপ্রাপ্ত দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বলেন, হল প্রশাসন আমাদের বক্তব্য শোনেনি। এমনকি আমাদেরকে বয়ান পড়তে না দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়। প্রভোস্ট ও হাউস টিউটর ম্যামদের মধ্যে কেউ কেউ আমাদের চরিত্র নিয়েও মন্তব্য করেছেন, যা একজন শিক্ষার্থীর মর্যাদার পরিপন্থী। আমাদের তিনটি শর্ত দেওয়া হয়েছিল, পরে তা প্রক্টর স্যারকে জানানো হয়। এরপর কোনো আলোচনা ছাড়াই আমাদের বিরুদ্ধে শাস্তি জারি করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম বলেন, র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ পাওয়ার পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। হল প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করেছে এবং আমরা প্রক্টরিয়াল বডি থেকেও একাধিকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। উভয় পক্ষ থেকেই লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছিল। এরপর সংশ্লিষ্টদের পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে আমাদের কাছে দাখিল করা হয়। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ঘটনার পরদিন সকালেই পরীক্ষা না দিয়ে বাড়ি চলে যায় এবং বাসা থেকেই অভিযোগ পাঠায়। পরে হল প্রশাসন তাকে ডেকে এনে সরাসরি বক্তব্য নেয় এবং বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

ঘটনার বিষয়ে তাপসী রাবেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইসরাত জাহান শেলী বলেন, এটি হলের অভ্যন্তরীণ একটি বিষয় ছিল এবং তদন্তে আমরা যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছি। তদন্ত কমিটিতে আমি নিজে ছাড়াও হলের তিনজন হাউজ টিউটর সদস্য হিসেবে ছিলেন। আমরা লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে উভয় পক্ষের বক্তব্য নিয়েছি এবং তদন্ত করে প্রতিবেদন উপাচার্য স্যারের কাছে উপস্থাপন করেছি। পরে অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, অভিযোগ ছিল, রাত ১টা ৪৫ মিনিট থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত পাঁচজন মিলে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে মানসিকভাবে নির্যাতন করেছে। মেয়েটি সে সময় অসুস্থ অনুভব করছিল এবং বারবার জানাচ্ছিল সে শারীরিকভাবে ভেঙে পড়ছে, স্ট্রোক করতে পারে। কিন্তু অভিযুক্তরা নাকি তখন বলেছে, ‘মারা যাওয়ার আগে কিছু লক্ষণ তো দেখাও।’ বিষয়টি অত্যন্ত অমানবিক। আমরা মেয়েটিকে অভিভাবকসহ ডেকে এনে তার বক্তব্য নিয়েছি এবং পৃথকভাবে অভিযুক্ত পাঁচজনের সঙ্গেও বিস্তারিত আলোচনা করে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছি।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত